জুড়ীতে ধর্ষক কালা গ্রেফতার,এলাকায় শান্তি
প্রকাশিত হয়েছে : ১:০৮:৩৩,অপরাহ্ন ১৪ মার্চ ২০২৪
জুড়ী (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি :: শিশু ধর্ষণ, ছেলেদের বলাৎকার,নিরীহ হিন্দু পরিবারে আক্রমন, নারী নির্যাতন,চুরি, চোরাই মাল বহন সহ অর্ধশতাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে জাহাঙ্গীর আলম কালার নামক এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সে জুড়ী উপজেলার ভোগতেরা গ্রামের আব্দুর রশিদের পুত্র।তার ভয়ে এলাকায় অনেক শিশুকে অন্যত্র লেখাপড়া করাতে হচ্ছে। বিশেষ করে স্কুল,মসজিদ,মাদ্রাসা গামী শিশুদের জোর করে বলাৎকার করা তার নেশা।এ অপরাধে একাধিক মামলা হলে ও জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় এসব কাজে লিপ্ত থাকতো সে।এ নিয়ে গ্রামবাসী কয়েকবার তাকে গণধোলাই দিয়ে গ্রাম ছাড়া করলে ও পরিবারের আশ্রয়ে পুনরায় গ্রামে এসে এসব কাজ করতো। ভোগতেরা গ্রামের মধ্যে অবস্থিত বাইতুল কোরআন মাদ্রাসা,ভোগতেরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ভোগতেরা মসজিদ থেকে শিশুরা যাওয়ার পথে জোর করে বলাৎকারের একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার ভয়ে গ্রামের কয়েকজন অভিভাবক তাদের বাচ্চাকে উপজেলার বাহিরের প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করতে পাঠিয়ে দেন। সর্বশেষ ৪ মার্চ ভোগতেরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বিদ্যালয় থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে তাকে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করে জাহাঙ্গীর আলম কালা।পথচারী দেখে যাওয়ায় সে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।পরে শিক্ষার্থীর পালক মা বাদী হয়ে জুড়ী থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।মামলার ৫ দিন অতিবাহিত হলে ও তাকে গ্রেফতার করতে না পারায় ১০ মার্চ ভোগতেরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী,অভিভাবক এবং ভোগতেরা, কালিনগর,গরেরগাও,বিশ্বনাথপুর গ্রামের মানুষ যৌথভাবে মানববন্ধন করে তাকে গ্রেফতার ও তার শাস্তি দাবি করে।মঙ্গলবার রাত ১২ টার দিকে জুড়ী থানার সাব ইন্সপেক্টর মোস্তফা কামালের নেতৃত্ব পাশ্ববর্তী চাটেরা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।এতে এলাকাবাসীর সহযোগিতা রয়েছে বলে জানা গেছে।
তাকে গ্রেফতারে ভোগতেরা এলাকার মানুষের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে।রাতেই এলাকার অনেক লোক একত্রিত হয়ে তার শাস্তি দাবি করেন।
ভোগতেরা গ্রামের তাজ উদ্দিন বলেন,সে এতই খারাপ যে,তাকে দেখলে শিশুরা ভয়ে কেদেঁ ফেলতো।গ্রামের অভিভাবকরা কালার ভয়ে তাদের বাচ্চাকে মসজিদ,স্কুল,মাদ্রাসায় নিয়ে যাওয়া আসা করতেন।যা এ গ্রামে আগে কখনও ছিল না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফয়জুল ইসলাম কালা বলেন,সে অনেকগুলো অপরাধ করে ও পার পেয়ে যায়।আইনের ফাঁক ফোকরে জামিন নিয়ে বেরিয়ে এসে পুনরায় এসব কাজ শুরু করে।সে যাতে জামিন না পায় সে জন্য বিচারকের প্রতি অনুরোধ জানাবো।তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা এফেয়ার হলে ও অনেক গুলো অভিযোগ রয়েছে। অনেক নিরীহ ভুক্তভোগী পরিবার তার অত্যাচারে অভিযোগ করতে ও সাহস পান না।
একই গ্রামের কয়েকজন জানান,সে নেশাগ্রস্ত লোক।তার মা বাবা এলাকার কয়েকজনের সহযোগিতায় একটি বিয়ে করিয়েছিলেন।বিয়ের পর সে তার স্ত্রীকে মারধর করতো।পরে পরিবারের সবাই তাকে রশি দিয়ে বেধেঁ রেখেছিল।এরপর ছাড়া পেয়ে স্ত্রী’র মাথার চুল কেটে দিলে স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে গেলেও কোন ধরনের মামলা করেনি।তাছাড়া পাশ্ববর্তী কালিনগর গ্রামের নিরীহ মানুষের উপর,হিন্দু নিরীহ পরিবারে রাতে গিয়ে হামলা করতো।টাকা না দিলে সে তাদের মারধর করে ঘরের আসবাব পত্র নিয়ে আসতো।
জুড়ী থানার ওসি এস এম মাইন উদ্দিন বলেন, তার বিরুদ্ধে জুড়ী থানায় দুইটি ধর্ষণ,একটি বলাৎকার ও বিভিন্ন ধারায় ৫ টি মামলা রয়েছে এবং কমলগঞ্জ থানায় আরেকটি মামলা রয়েছে।
বুধবার তাকে কোর্ট হাজতে প্রেরন করা হবে।