কমলগঞ্জে ব্রীজ উদ্বোধনের ৪ বছর পরও সম্পন্ন হয়নি সংযোগ সড়ক, জনদূর্ভোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:১৬:০১,অপরাহ্ন ২৩ নভেম্বর ২০১৯
মো.মালিক মিয়া, কমলগঞ্জ ::
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ঘোড়ামাড়া-শুকুর উল্লাহগাঁও সড়কের ধলাই নদীর উপর বিদ্যমান ব্রিজটি উদ্বোধনের পর ৪ বছর অতিবাহিত হলেও দুই পাশের সংযোগ সড়কের কাজ অসমাপ্ত থাকায় যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী। এছাড়াও ব্রিজের দুই পাশের সংযোগস্থলের মাটি ভেঙ্গে পড়ায় এখানে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে দুই ইউনিয়নে কয়েক হাজার জনসাধারণকে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
জানা গেছে, ঘোড়ামাড়া-শুকুর উল্লাহগাঁও সড়কটি আদমপুর ও মাধবপুর ইউনিয়নের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী একটি জনগুরুত্বপূর্ন সড়ক। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। চার বছর আগে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ৯৬ মিঃ আরসিসি পিএসসি গার্ডার এই ব্রিজটি। ২০১৬ সালের ১৭ মার্চ ব্রিজটি উদ্বোধন করেন এ অঞ্চলের সাংসদ ও সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো.আব্দুস শহীদ এমপি.।
সরেজমিনে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দু’পাশের সংযোগ সড়কের কাজ অসম্পূর্থ রেখেই ২০১৬ সালে ব্রিজটি উদ্বোধন করা হয়। তবে খুব দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তখন। এরপর দীর্ঘ প্রায় ৪ বছর অতিক্রান্ত হলেও বিদ্যমান ব্রিজটির সংযোগ সড়কের কাজ সম্পন্ন হয়নি। ফলে গ্রামীণ এই কাঁচা সড়কটিতে যাতায়াতের সময় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এই সড়কে যাতায়াতকারী দুই ইউনিয়নে বসবাসকারী লোকজন সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষজন। ব্রিজটির দুই মাথা থেকে মাটি নিচে দেবে যাওয়ায় মোটরসাইকেল-বাইসাইকেল ব্যতীত অন্যান্য কোনও যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এতে এ অঞ্চলে ঘুরতে আসা পর্যটকদের পর্যটন কেন্দ্র মাধবপুর লেক ও বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতি স্মরণীসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্পট প্রায় ৯ কিঃ কিঃ ঘুরে আসতে হচ্ছে । এতে তাদের এক দিকে যেমন অতিরিক্ত সময় ব্যয় হচ্ছে তেমনি ভাড়ার ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে এবং নষ্ট হচ্ছে প্রয়োজনীয় কর্মঘন্টা।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক রেষারেষির কারণে এই রাস্তাটিতে মাটি ভরাট এবং ইট সলিং এর কাজ হচ্ছে না। এদিকে অতিসম্প্রতি সড়কটির মাধবপুর অংশে একটি কালভার্ট ভেঙ্গে পড়ায় বিষয়টি যেন গ্রামবাসীর উপর মড়ার উপর খাড়ার ঘাঁ এর মতো হয়ে দাড়িয়েছে। ভেঙ্গে পড়া এই কালভার্টটির উপর ফিসপ্লেট ফেলে যোগাযো পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন এলাকার কৃষক ও শিক্ষার্থীরা।
শুকুরউল্লা গ্রামের কৃষক আবুল কালাম বলেন, প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে এলাকার শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। কিন্তু ভেঙ্গেপড়া কালভার্টটির সংস্কার ও সড়কটি পাকা করন না হওয়াতে আমাদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। তিনি প্রশানের নিকট অবিলম্বে রাস্তা ও কালভার্ট সংস্কারের জোর দাবী জানান।
শিক্ষার্থী রিপা বেগম বলেন, আমরা প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। কিন্তু রাস্তার মাঝখানে এসে ভয় লাগে। ব্রিজ ভাল থাকলেও রাস্তা কাচা থাকায় এবং ব্রিজ এর দুই মাথা হতে মাটি অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় আমাদের কষ্ট করে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করতে হয়। আমাদের দাবি আমরা যাতে সুন্দর ভাবে বিদ্যালয়ে যেতে পারি সেজন্য রাস্তাটি পাকাকরণ করা হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল কুমার সিংহ মুঠোফোনে জানান, তিনি দু’বার সেঁতুটির একপাশে ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে প্রায় ছয় হাজার টাকা খরচ করে মাটি ভরাট করেছেন। কিন্তু বিগত দিনের অতিবৃষ্টির কারণে মাটিগুলো সরে গিয়ে ব্রিজের দুই মাথার এই অবস্থা হয়েছে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু বলেন, সড়ক ও ব্রিজটির এই বেহাল অবস্থা থাকায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগের শেষ নেই। তিনি আরো বলেন রাস্তাটি পাকাকরন করা হলে দুই ইউনিয়নবাসী সহ পর্যটকদের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আরো একধাপ এগিয়ে যেত।