মৌলভীবাজারের ৫ উপজেলায় বন্যার পানি বৃদ্ধি, চরম ভোগান্তিতে বানবাসীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৫০:৪৮,অপরাহ্ন ০৩ জুলাই ২০২৪
মো: মছব্বির আলী, মৌলভীবাজার :: ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে মৌলভীবাজারে মনু ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার শহরের মনু সেতুর কাছে চাঁদনীঘাটে মনু নদের পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার এবং সদর উপজেলার শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের হামরকোনা এলাকায় কুশিয়ারার পানি উপচে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে জনপদে প্রবেশ করেছে। এ এলাকায় কুশিয়ারার স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ নেই। গ্রামীণ সড়কটিই প্রতিরক্ষা বাঁধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নতুন করে ভাঙনের ফলে আশপাশের গ্রামগুলো বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত থেকে মৌলভীবাজারে মনু, কুশিয়ারাসহ জেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। মনু নদের পানি মৌলভীবাজার শহরের মনু সেতুর কাছে সোমবার সন্ধ্যায় বিপৎসীমার ৯ দশমিক ৬৩ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। একই জায়গায় মঙ্গলবার সকালে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছিল।
অন্যদিকে সদর উপজেলার শেরপুরে সোমবার সন্ধ্যায় কুশিয়ারা নদীর পানি ছিল ৮ দশমিক ৪৯ সেন্টিমিটার বা বিপৎসীমার নিচে। মঙ্গলবার সকাল নয়টায় সেখানে বিপৎসীমার সাত সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের শেরপুরের বিভিন্ন স্থানে বাঁধ উপচে পানি ঢুকছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার সকালের দিকে হামরকোনা মসজিদের কাছে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে গ্রামের ভেতর পানি প্রবেশ করছে। ধলাই নদের পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জুড়ী নদীর পানি অনেক দিন ধরেই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল সকাল ৯টায় জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৭৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
বন্যা কবলিত এলাকা ও উজানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় আবারও বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও রাজনগর উপজেলার ২টি ইউনিয়ন ও সদর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়ে দীর্ঘস্থায়ী বন্যার রূপ নিয়েছে। ২ সপ্তাহের অধিক সময় থেকে পানির নীচে তলিয়ে রয়েছে কুলাউড়া পৌর সাভার ৫টি ওয়ার্ড, কুলাউড়া উপজেলা পরিষদ, জুড়ী উপজেলা পরিষদ সহ ওইসব এলাকার বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তা ঘাট।
বৃষ্টিপাতের কারণে কুশিয়ারা, জুড়ী, ফানাই ও আন ফানাই নদী দিয়ে ঢল নেমে বন্যার পানি বৃদ্ধি পায়। সৃষ্ট দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় এসব এলাকার পানিবন্দি সাধারণ মানুষ এখন চরম ভোগান্তি পড়েছেন। বন্যার কারণে যারা আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন তাদের বাড়ি ফেরা অনেকটা অনিশ্চিত রয়েছে। সরকারি হিসেবে ৩ লাখ মানুষ এখনও পানিবন্ধি রয়েছেন। দীঘদিন বাড়ি-ঘর পানির নীচে তলিয়ে থাকায় সেগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। দুর্গত এলাকায় স্যানিটেশন, শিশু খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে।
কুলাউড়া : ভারী বর্ষণে, উজানের পাহাড়ি ঢল ও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফুলে ফেঁপে উঠেছে হাকালুকি হাওর। কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা উপজেলায় হাকালুকি হাওর পারের বিভিন্ন ইউনিয়নের প্লাবিত গ্রামগুলোতে নতুন করে পানি প্রবেশ করছে। ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে হাকালুকি হাওরের পানি ক্রমশই বৃদ্ধি পাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে কুলাউড়া উপজেলা পরিষদ এলাকা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ উপজেলার প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরসহ আবাসিক এলাকা। গত ১৬ দিন ধরে বন্যার পানিতে সরকারি হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ও উপজেলা প্রশাসনিক অফিসসহ আশেপাশের আবাসিক এলাকা নিমজ্জিত থাকায় স্বাস্থ্যসেবা প্রদান ও সরকারি দাপ্তরিক কার্যক্রমে চরম ব্যাঘাত ঘটছে। পানিবন্দি থেকে চিকিৎসা সেবা ও উপজেলা প্রশাসনিক কাজ-কর্ম করছেন বিভিন্ন দাপ্তরিক কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা। এতে সরকারি অফিস ও হাসপাতালের সেবা গ্রহীতাদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। এদিকে বন্যায় মানুষের জীবনরক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রবেশ মুখে পানিময় দুর্ভোগের কথা মাথায় নিয়ে রোগীদের কষ্টের কথা চিন্তা করে কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম আতিকুর রহমান আখই, ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন সুমন ও আব্দুল কাইয়ুম এর অর্থায়নে হাসপাতালের সম্মুখে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ করা হয়েছে ৩০০ ফুট লম্বা ভাসমান অস্থায়ী সেতু। বেশ কয়েকটি প্লাস্টিকের খাঁচার ওপর বাঁশকাঠ লোহা ও রশি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়। যাতে করে অনায়াসে লোকজন তার ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে পারেন। ১৭ জুন থেকে এখনও হাকালুকি হাওরের বন্যার পানিতে কুলাউড়া উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৪টি ওয়ার্ডের ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সড়ক পানির নিচে ডুবে আছে। ২৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ২ হাজার ৬৩ জন মানুষ ও উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এদিকে কুলাউড়ায় বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। এখানকার মানুষের বাসাবাড়িসহ জনগুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে ডুবে আছে। এতে করে এখনও স্বাভাবিক হয়নি এ উপজেলার মানুষের দৈনন্দিন জীবন ব্যবস্থা। বন্যার শুরু থেকে জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও ব্যক্তি উদ্যোগে অনেকেই বন্যার্তদের পাশে রয়েছেন। বানের পানি নামতে শুরু করায় নদীতীরবর্তী বিভিন্ন গ্রামের ঘরবাড়ি ছাড়া মানুষ নিজ ভিটায় ফিরতে শুরু করলেও গত দুই দিন ধরে ফের পানিবৃদ্ধি পাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্রে ফিরছেন বানবাসী লোকজন। নদী-নদীর পানির প্রবাহ বেশি থাকায় কমেনি হাকালুকি হাওরের পানি। হাওরবেষ্টিত এলাকার পানি কমছে খুবই ধীরগতিতে। এলাকাবাসী জানায়, হাকালুকি হাওর তীরবর্তী কুলাউড়া উপজেলায় বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে জলাবদ্ধতায় রূপ নিয়েছে। বানভাসি লোকজন জানান, একের পর দুর্যোগের কবলে পড়ে তারা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের এলাকার লোকজন নামমাত্র সরকারি ত্রাণ সহায়তা পেলেও ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই কিছুই পায়নি। ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেক স্বেচ্ছাসেবী লোকজন তাদের কিছু সহায়তা করেছেন। বন্যায় ঘরবাড়ি হারিয়ে তারা এখন আশ্রয় কেন্দ্রে মানবেতর দিনযাপন করছেন।
এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সসদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ মোহাম্মদ আবু জাফর রাজু, জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মাওলানা ফজলুল হক খান সাহেদ প্রমুখ।
ভূকশিমইল গ্রামের এম এস আলী জানান, আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মানুষ খাদ্য সংকটের সঙ্গে বিশুদ্ধ পানির সমস্যায় ভুগছে। এতে পানিবাহিত রোগজীবাণুতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে হাওর এলাকায়।
ভূকশিমইল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা এসএসসি শিক্ষার্থী আতাউর রহমান লাবিব বলেন, বন্যায় আমাদের ঘরবাড়ি প্লাবিত হলে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে আসি। পানি কিছুটা কমলে বাড়ি ফিরলেও সাপ বিচ্ছুর ভয়ে আবারো আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছি। বন্যার পানি পুরোপুরি না কমলে বাড়িতে যাবো না। বন্যার কারণে অনেক ভোগান্তির মধ্যে রয়েছি পরিবারের সবাইকে নিয়ে।
স্থানীয় লোকজনের দাবি, প্রায় প্রতিবছর বন্যার পানির সঙ্গে লড়াই করে এ এলাকার মানুষকে বাঁচতে হয়। বন্যার স্থায়ী সমাধানে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা না নেওয়ায় বর্ষা মৌসুম এলেই প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হন তারা। জুড়ী নদীসহ হাকালুকি হাওরের নদনদী, খাল-বিল, নালা খনন না হওয়ায় তলদেশ দিন দিন ভরাট হচ্ছে। ফলে নদনদী টইটম্বুর হয়ে পানি ধারণের ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বৃষ্টি ও উজানের ঢলের পানি দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
জানা যায়, সীমান্তবর্তী জুড়ী নদীর পানি হাকালুকি হাওরে পতিত হয়। ফলে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত এ নদীর পানিতে ভাসছে হাকালুকি হাওরের মানুষ। হাওর তীরবর্তী কুলাউড়া উপজেলার ভূকশিমইল, বরমচাল, কাদিপুর, ভাটেরা, জয়চন্ডী, জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী, জায়ফরনগর, গোয়ালবাড়ি, বড়লেখা উপজেলার বর্ণি, তালিমপুর, দাশেরবাজারসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের শত শত গ্রামের হাজার হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দি রয়েছেন।
কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আখই জানান, বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে হাসপাতাল এলাকাটি। দুর্ভোগে পড়েছেন স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা। বন্যার পানিতে হাসপাতাল সড়কটি তলিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট কেউই এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসেননি। মানুষের কষ্ট লাগবে ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বানে ভাসমান সেতু স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি করা হয়েছে। এতে করে কিছুটা হলেও সহজ হবে যাতায়াত ব্যবস্থা।
হাওর তীরবর্তী ভূকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির জানান, হাকালুকি হাওর এখন তার উত্তাল রূপ দেখাচ্ছে। ভয়াবহ ঢেউ তীরবর্তী এই এলাকাগুলোর রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি করছে। মানুষের কাঁচা বাড়িঘরও ভাঙছে। হাওর পাড়ের মানুষ এখন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ইউনিয়নের অনেক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ শিমুল আলী বলেন, বন্যায় যাদের বাড়িঘরে পানি উঠেছে তাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছে প্রশাসন। উপজেলা পরিদ প্রাঙ্গণ প্লাবিত থাকায় আমরা নিজেরা পানিবন্দি থেকে সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। কুলাউড়ায় ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা মিলে প্লাবিত গ্রামের সংখ্যা ১১৬টি। ২৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ হাজার ৬৩ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। সরকারিভাবে নগদ ২ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে ৬২০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে।
কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ জানান, পৌরসভার ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও খাবার সহায়তা প্রদান করা হয়েছে ।
বড়লেখা: গত সপ্তাহ খানেক ভারি বৃষ্টিপাত না হওয়ায় হাকালুকি হাওড়পাড়ের বড়লেখা, কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র থেকে আশ্রিত দুর্গত পরিবার বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু এরই মাঝে সোমবার ও মঙ্গলবারের টানা ভারিবর্ষণে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। জুড়ী ও সোনাই নদীর বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। তিন উপজেলার দুই লক্ষাধিক পানিবন্দী মানুষ পাচ্ছে না পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা। বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর, বর্নি ও সুজানগর ইউনিয়নের বিভিন্ন দুর্গত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, যে সকল বাড়িঘরের উঠোন ও গ্রামীণ সড়ক থেকে বন্যার পানি কিছুটা নেমেছিল সেগুলোতে ফের পানিতে তলিয়ে গেছে। আবারও বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে দাসেরবাজার-বাছিরপুর এলজিইডি রাস্তা।
দাসেরবাজার-ফকিরবাজার এলজিইডি রাস্তার বিভিন্ন স্থান ফের তলিয়ে গেছে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগ বেড়েছে এসব এলাকার মানুষের। উপজেলার ৩৩টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া সাড়ে ৪ শতাধিক দুর্গত পরিবারের মানুষের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, ১৮ জুনের পর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বড়লেখার ১০ ইউনিয়নের বন্যার্তদের জন্য ১২৫ মেট্টিক টন চাল, আশ্রয় কেন্দ্রের জন্য ১৪ কেজি ওজনের ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, ২৫ কেজির ৬৯ প্যাকেট গো-খাদ্য বরাদ্দ পাওয়া যায়। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। ফের বন্যার অবনিতে ভোক্তভোগিদের মাঝে দেখা দিয়েছে খাদ্যসহ নানা সংকট। বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজরাতুন নাঈম জানান, বন্যার অবনতিতে বড়লেখার ১০ ইউনিয়নে আরো ৫০ টন জি.আর চাল বরাদ্দ পেয়েছেন। তা বন্টন কার্যক্রম চলছে। এছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য শুকনো খাবার ও শিশুখাদ্য প্রস্তুত রয়েছে। সোমবার থেকে এসিল্যান্ড শিশুখাদ্য বিতরণ করছেন।