ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় ব্রিজ থেকে ফেলে দিল বখাটেরা
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:৪২:৫৮,অপরাহ্ন ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় স্কুলের মেয়েদের ইভটিজিং করার প্রতিবাদকালে আকমল হোসেন রুমেল নামক এক ব্যক্তিকে ব্রিজ থেকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফিলে দেয় দুই বখাটে। বখাটেরা হলো উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের মুকুন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা রমজান মিয়া ছিলে বেলাল হোসেন রানা (২২) ও একই ইউনিয়নের একিদত্তপুর গ্রামের আজির উদ্দিনের ছেলে জয়নাল আবেদীন রনি (২০)। বেলাল হোসেন উপজেলার লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজ ও জয়নাল আবেদীন শাহজালাল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বখাটে জয়নালকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের মীরের গ্রামের বাসিন্দা মৃত আবুল হোসেনের ছেলে আকমল হোসেন রুমেল (৪৫) প্রতিদিনের মতো স্থানীয় একিদত্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তাঁর দ্বিতীয় শ্রেণিপড়ুয়া মেয়ে সাবিয়া হোসেন (৭) কে স্কুল থেকে আনতে যান। ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় আকমল হোসেন ও তাঁর চাচাতো ভাই আনকার হোসেন তাদের মেয়েদের স্কুল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসার পথে স্থানীয় মীরেরগ্রাম ও মুকুন্দপুর এলাকার মধ্যবর্তী স্থানে বাড়ুয়া ছড়া ব্রিজের ওপর দেখতে পান বখাটে বেলাল হোসেন রানা ও জয়নাল আবেদীন রনি ব্রিজের ওপরে দাঁড়িয়ে স্কুলগামী ছাত্রীদের ইভটিজিং করছিল। এ সময় আকমল হোসেন ও আনকার হোসেন ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করলে বখাটে রানা ও রনি তাদের সাথে বাকবিত-ায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তাদের প্রাণনাশের হুমকি দেয় বখাটেরা। এ সময় বখাটেরা আকমল হোসেনের সাথে ধস্তাধস্তি করে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে ব্রিজের ওপর থেকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় ২৫ ফুট নিচে ফেলে দেয়। এতে আকমল হোসেন গুরুতর আহত হলে তার কোমরের হাড় ভেঙে যায় এবং বাম হাতের কবজিতে জখম হয়।
আকমলের চিৎকার শুনে তাকে বাঁচাতে গেলে তাঁর ভাতিজা কুলাউড়া সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রাহাত হোসেন রাজের ওপরও হামলা চালায় তারা। পরে স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। আকমল হোসেনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
শাহজালাল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কবির মিয়া জানান, রনি স্কুলের অনিয়মিত ছাত্র। ঘটনার দিন সে স্কুলে আসেনি। স্কুলের পাশের একটি দোকানে সে বসেছিল। স্কুলের অ্যাসেম্বলির সময় তাকে বাইরে বসতে দেখে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায় বই-খাতা নিয়ে আসিনি। এরপর আমি বিদ্যালয়ে চলে আসি। পরে খবর পাই সে ব্রিজের ওপর রুমেল নামক ব্যক্তির ওপর তার সহযোগীদের নিয়ে হামলা চালায়। এর আগেও সে বিদ্যালয়ের প্রায়শই ছাত্রীদের সাথে খারাপ আচরণ করত।
কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হক বলেন, আহত আকমল হোসেনের কোমরে আঘাতজনিত কারণে দুই পা কিছুটা অসাড় মনে হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি কলেজছাত্র রাজের ডান হাতের কাঁধের জয়েন্টের হাড় সরে গেছে।
কুলাউড়া থানার ওসি মো. ইয়ারদৌস হাসান বলেন, এ ঘটনায় আকমল হোসেনের ভাই দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে দুজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।