ডেস্ক রিপোর্ট :: সিলেট-বিয়ানীবাজার-বারইগ্রাম সড়কের গুরুত্বপূর্ণ শেওলা সেতুতে টোল আদায় নিয়ে জনমনে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। বছরের পর বছর থেকে এ সেতুর উপর দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন টোল প্রদান করলেও কবে তা বন্ধ হবে, এ প্রশ্নের উত্তর নেই কারো কাছে। খোদ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারাও বলতে পারছেন না, শেওলা সেতুর টোল আদায় আর কতকাল চলবে। ফলে গত ক’মাস থেকে এ সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল অনেকটা কমে গেছে। বিকল্প রাস্তা দিয়েই চলাচল করছে যানবাহন। তাছাড়া বর্তমান ইজারাদার টোল আদায়ে রশিদ দেন না বলেও রয়েছে অভিযোগ।
জানা যায়, বিএনপির নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে শেওলা সেতুর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এম. সাইফুর রহমান। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে সেতুর নির্মাণ কাজে গতি বৃদ্ধি পায়। ১৯৯৯ সালের ৩১ জুলাই শেওলা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে সেতুর উপর দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের কাছ থেকে টোল আদায় শুরু হয়। প্রতি বাংলা বছরের শুরুতে সেতুর তদারকি কর্তৃপক্ষ সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় বেসরকারী উদ্যোক্তাদের টোল আদায়ের দায়িত্ব প্রদান করে। এক্ষেত্রে সরকার প্রতি বছরে কোটি টাকার মত রাজস্ব পেয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমান ইজারাদারের নির্ধারিত ব্যক্তিরা টোল আদায়ের সময় গাড়ি চালকদের দিচ্ছেন না কোন রশিদ। যার কারণে সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব এমন অভিযোগ করেছেন গাড়ি চালকেরা। তবে এব্যাপারে কিছু বলতে রাজি হন নি টোল আদায়কারী কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া টোল আদায়ের ১৭ বছর অতিক্রম হওয়ায় অনেকেই এখন আর টোল আদায় করতে চান না।
সিলেট জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সেলিম আহমদ ফলিক জানান, শেওলা সেতুতে টোল প্রদান না করার বিষয়ে আমাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছে শ্রমিকরা। অনেক ছোট গাড়ির মালিকও টোল প্রদানে অনাগ্রহী। তাদের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে তিনি মত দেন।
সিলেট জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, এমনিতেই আমরা বাস মালিকদের ব্যবসা ভালো যাচ্ছেনা। এছাড়া সিলেট-বিয়ানীবাজার সড়কের যে বেহাল অবস্থা, তাতে আমরা গাড়ি মালিকরা ট্রিপ প্রতি খরচ তুলতে পারছিনা। এ প্রেক্ষাপটে শেওলা সেতুতে টোল প্রদান বন্ধে জেলা প্রশাসক কিংবা সওজের স্থানীয় প্রধান নির্বাহী ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখতে পারেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে অচিরেই দেখা করবো।’
সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা এস এম জাকারিয়া জানান- আসলে এটা সেতু ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার। বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে হয়তো কিছু একটা হতে পারে।
শেওলা সেতুর টোল আদায় নিয়ে জানতে চাইলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. রাহাত আনোয়ার জানান-সরকারকে রাজস্ব দেয়া উচিত। তা না হলে সরকার চলবে কিভাবে। তবে নির্ধারিত টোলের বেশী কেউ আদায় করলে এবং রশিদ ছাড়া টোল আদায় করার অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।