গরুর মৃত্যুতে বিলম্বিত বিদ্যুৎ সরবরাহ:বড়লেখায় বিক্ষুব্ধ গ্রাহকের বিদ্যুৎ অফিসে তালা
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:২৯:৪২,অপরাহ্ন ২৪ জুন ২০১৯
এদিকে পল্লী বিদ্যুতের পূর্বঘোষিত ৬ দিনের ফিডার বন্ধের দ্বিতীয় দিনে কুলাউড়ায় পল্লীবিদ্যুতের তারে জড়িয়ে একটি গরু মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে মৌলভীবাজার জেলার ৪ উপজেলার ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি বিদ্যুৎ গ্রাহককে রোববার বেলা ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ৭ ঘন্টা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।অবশেষে বিষয়টি ২৫ হাজার টাকায় আপোষ মিমাংসা হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়।
স্থানীয় ও পল্লীবিদ্যুত বিভাগ সুত্রে জানা যায়, বড়লেখা উপকেন্দ্রের ৩৩ কেভি সোর্স লাইনে ডাবল সার্কিট নির্মাণের জন্য শাটডাউনের প্রয়োজনে উপকেন্দ্রের ফিডার বন্ধ করে ২২শে জুন শনিবার থেকে ২৩ জুন রোববার, ২৬ জুন বুধবার থেকে ২৭ জুন বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন শনিবার ও ৩০ জুন রোববার প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বড়লেখা উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে এমন নোটিস দেয় পল্লীবিদ্যুত সমিতি।কিন্তু বাস্তবে শনিবার প্রথম দিনেই নোটিশে সকাল ৭ ঘটিকা থেকে বিকেল সাড়ে তিন টা পর্যন্ত বন্ধ থাকার কথা থাকলেও বিদ্যুৎ এসেছিলো বিকেল ৫টায়।
রোববার এ শাটডাউনের দ্বিতীয় দিনে সকাল ৭টায় বিদ্যুৎ চলে যায় কিন্তু রাত ৮:৩০ মিনিট পর্যন্ত অর্থাৎ একটানা দীর্ঘ ১৫ঘন্টা বিদ্যুৎহীনতায় থাকে উপজেলাবাসী।
বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ চরম উদাসীনতার পরিচয় দেয়। এ নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গ্রাহকরা পল্লীবিদ্যুতের দায়িত্বশীলদের কাছে ফোন দিলে তারা ফোন রিসিভ করেননি। এ নিয়ে গ্রাহকরা ফেইসবুকে এবং পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে উপস্থিত হয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।বিক্ষুদ্ধ গ্রাহকরা রাত ৮টায় জোনাল অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয় ।এসময় বড়লেখা উপজেলা চেয়ারম্যান সুয়েব আহমদ বিক্ষুব্ধ গ্রাহকদে মাঝে উপস্থিত হয়ে এই বিক্ষোভের সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য দেন। রাত ৯টায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়।
রোববার বেলা আনুমানিক ২ ঘটিকায় কুলাউড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের কাছে পল্লীবিদ্যুতের একটি খুঁটিতে বাঁধা গরু বিদ্যুৎ স্পর্শে মারা যায়।এতে কুলাউড়া গ্রীড স্টেশন থেকে কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
গরুর মৃত্যুর জেরে গরুর মালিকসহ স্থানীয় লোকজন ক্ষতিপূরণের দাবিতে পল্লীবিদ্যুতের লোকজনকে বিদ্যুৎ চালু করতে বাঁধা দেয়। এতে ৫ উপজেলার ১ লাখ ৬০ হাজার গ্রাহক বেলা ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিদ্যুৎহীন ছিলেন। প্রচন্ড গরমে মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে।
বিষয়টি কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান শফি আহমদ সলমানকে অবহিত করলে তিনি পৌরসভার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলারকে বিষয়টি আপোষ নিষ্পত্তির দায়িত্ব দেন। সন্ধ্যা ৬টায় বিষয়টি আপোষ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বসে বৈঠক।
কুলাউড়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার ইকবাল আহমদ শামীম জানান, বৈঠকে গরুর মালিককে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২৫ হাজার টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। পল্লীবিদ্যুত বিভাগ সেই টাকা পরিশোধে সম্মত হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ লাইন মেরামত করে রাত ৯টায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করেন।
পল্লীবিদ্যুতের শ্রীমঙ্গল জোনাল অফিসের জেনারেল ম্যানেজার শিবুলাল বসু জানান, ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন আমাদের খুঁটির কাঁছে যেতে দেয়নি। ফলে কাজ করা সম্ভব হয়নি।রাতে বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়ার পর পল্লীবিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন কাজ করছে।রাত ৯টায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা সম্ভব হয়।