বড়লেখায় ছেলের জীবন বাঁচাতে নিজের কিডনি দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ‘মা’
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:৩৭:২৪,অপরাহ্ন ২২ জুন ২০১৯
সন্তানকে বাঁচাতে ছুটে যাওয়া ওই মা মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা পৌরসভার পাখিয়ালা গ্রামের প্রবাসী ফখর উদ্দিনের স্ত্রী। বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি হাসপাতালে মায়ের দেয়া কিডনি ছেলের দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করেছেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে মা ও ছেলে দুজনেই সুস্থ রয়েছেন বলে স্বজনদের সুত্রে জানা গেছে।
স্বজন, প্রতিবেশী ও প্রবাসী সূত্রে জানা গেছে, বেলাল আহমদ (২৮) প্রায় ৬ বছর আগে মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি তাঁর বাবার সাথে থেকে একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। কিন্তু বেলাল দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। কিডনি ডায়ালাইসিস করেও তাঁর অবস্থার উন্নতি হয়নি। সম্প্রতি চিকিৎসকরা বেলালকে জানান তাঁর দুটি কিডনিই একেবারে অকেজো হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় চিকিৎসকরা তাকে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন।
এদিকে বেলালের দুটি কিডনি নষ্ট হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন দেশে রেখে যাওয়া তাঁর মা সালেহা বেগম। এই অবস্থায় নিজের জীবনের কথা চিন্তা না করে একটি কিডনি ছেলেকে দেয়ায় সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছেলের কিডনির সাথে মিলে যাওয়ায় সালেহা বেগম সংযুক্ত আরব-আমিরাতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অবশেষে গত (১৯ জুন) বুধবার আমিরাতে আবুধাবি শেখ খলিফা হাসপাতালের চিকিৎসকরা মায়ের দেয়া একটি কিডনি ছেলের দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হন।
আমিরাত প্রবাসী বেলালের মামাতো ভাই মুহিবুর রহমান বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, বেলালের দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। পরে ফুফু (বেলালের মা) তাঁকে একটি কিডনি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বেলালকে কিডনি দিতে ফুফু কয়েক মাস আগে দেশ থেকে এখানে এসেছেন। বুধবার সন্ধ্যা আরব-আমিরাতের একটি হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে বেলালের দেহে কিডনি সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। মা ও ছেলে দুইজনেই সুস্থ রয়েছেন।
তিনি বলেন, নিজের কথা চিন্তা না করে একজন মা ছেলেকে বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিয়ে যে দৃষ্টান্ত গড়েছেন তা সত্যিই বিরল। আসলে সন্তানের জন্য সব মা-ই যে সব কিছু ত্যাগ করতে পারেন তিনি তা আবারো প্রমাণ করলেন।