কুলাউড়ায় একই ধানগাছ থেকে ফসল আসে পাঁচবার
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:২৭:৫৪,অপরাহ্ন ২৭ নভেম্বর ২০২১
রিয়েলটাইমস ডেস্ক :: কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের কানিহাটি গ্রামের কৃতি সন্তান জিনবিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী উদ্ভাবন করেছেন নতুন একজাত ধানগাছ।নতুন এই ধানগাছ একবার রোপণের পর পাঁচবার কাটা যায়।আবার বছরে এই একই ধানগাছ থেকে সর্বোচ্চ পাঁচবার ফসল পাওয়া যায়।
প্রথমবার চাষে ১১০ দিন পর ফলন আসে, পরের ফলন আসে ৪৫ দিন অন্তর,একবার বোরো, দুবার আউশ, দুবার আমন ধান আসে।ধানের চারা ৫ সেন্টিমিটার দূরত্বে রোপণ করতে হয়,প্রথমবার হেক্টরপ্রতি উৎপাদন ৪ টন, পরে কমে ২-৩ টন হয়।মাটি থেকে ৩৫ সেন্টিমিটার উচ্চতায় ফলন কাটতে হয় নতুন এই জাতের ধানগাছ।
ড. আবেদ চৌধুরী বংশগতিবিষয়ক গবেষক। অস্ট্রেলীয় একদল বিজ্ঞানীর সঙ্গে তিনি ফিস (ইনডিপেনডেন্ট সিড) জিন আবিষ্কার করেন। তিনি লাল রঙের চাল ও রঙিন ভুট্টা উদ্ভাবন করেছেন। তার রঙিন ভুট্টা ডায়াবেটিস ও ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে বিশ্বব্যাপী আলোচিত। এখন তিনি অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চফলনশীল ধান উৎপাদন ও ভবিষ্যতের খাদ্য নিরাপত্তাবিষয়ক গবেষণা করছেন।
কুলাউড়ার কানিহাটি গ্রামের কৃতী সন্তান আবেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে কৃষি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা শেষে চাকরি নিয়ে চলে যান অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানকার জাতীয় গবেষণা সংস্থার প্রধান ধানবিজ্ঞানী হিসেবে ধানের জিন নিয়ে গবেষণা করে কাটিয়ে দিয়েছেন ২০ বছর। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৩০০ রকমের নতুন ধান উদ্ভাবন করেছেন। পেশাগত কারণে বিদেশের মাটিতে গবেষণা করলেও দেশে তার গ্রাম কানিহাটিতে গড়ে তুলেছেন খামার। তার নামে আবেদ ধানও এলাকায় চাষ করে ব্যাপক সফল হয়েছেন কৃষকরা।
আবেদ চৌধুরীর এই ধান দেখাশোনা করছেন রাসেল মিয়া। তিনি বলেন, কৃষকরা খুব কম খরচে এই ধান উৎপাদন করতে পারবেন। প্রথমবার উৎপাদনে যে খরচ হয়, পরের বার আর তেমন খরচ নেই। প্রথমবার জমি প্রস্তুত করে বোরো রোপণের পর আর জমিতে হাত দিতে হয় না। নির্দিষ্ট একটা ব্যবধানে ধান কেটে নেওয়ার পর মোড়ায় ঘাস বাছাই করে সার দিই। তারপর আবার ধানের গাছ বাড়তে থাকে এখান থেকে।
কানিহাটি গ্রামের কৃষক রুশন মিয়া বলেন, আমাদের এলাকার ড. আবেদ স্যার যে ধান উৎপাদন করেছেন, সেটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। আমরা এই ধান নিজেরা চাষ করার জন্য অপেক্ষায় আছি।