বড়লেখায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাস্তা কাটা ও গাছ লুটের অভিযোগ!
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:২১:১৫,অপরাহ্ন ২৮ নভেম্বর ২০১৯
বিশেষ প্রতিবেদক ::
বড়লেখায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে প্রতিপক্ষের লোকজন ভাড়াটিয়া বাহিনী নিয়ে রাতের আঁধারে ১১ পরিবারের চলাচলের রাস্তা কেটে ফেলেছে। এর আগে রাস্তার পাশের ২০টি রেইনট্রি গাছ কেটে লুট করার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী ছলিমা বেগম সংশ্লিষ্ট আদালতে বিবাদীদের বিরুদ্ধে ১৮৮ ধারায় অভিযোগ দাখিল করেছেন। আদালত বিরোধপুর্ণ স্থানের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং তদন্তপুর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। রাস্তার দখল ও পুর্নদখল নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে যে কোন সময় মারাত্মক সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের মুর্শিবাদকুরা গ্রামের সফিক উদ্দিন, রফিক উদ্দিন, আতাব উদ্দিন, আসমান উদ্দিন, সোবহান উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন, কামাল উদ্দিন গং ১১ পরিবারের শতাধিক বাসিন্দা মৌরসী সুত্রে মালিক হিসেবে মুর্শিবাদকুরা মৌজার এসএ ১২৯৩ নং খতিয়ানের এসএ ১৭২ নং দাগের ভুমির একাংশ রাস্তা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে যাতায়াত করছেন। ১০-১২ বছর পূর্বে রাস্তার উভয় পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-গাছালিও রোপন করেন যা বেশ বড় হয়েছে। গত ৮ নভেম্বর সকালে রাস্তা সংলগ্ন ভুমির মালিক আব্দুল মন্নান, আব্দুছ ছালাম, আব্দুল ছত্তার, ছাইফুর রহমান গংরা দেশিয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জোরপুর্বক রাস্তাটি কেটে ফেলার ও রাস্তার পার্শের লাগানো বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ও মুতরা বেত কেটে নেয়ার হুমকি প্রদান করে। এঘটনায় রাস্তার মৌরসী স্বত্তবান ছলিমা বেগম বড়লেখা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতিপক্ষের ১২ জনের বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারায় পিটিশন (৯১/১৯) মামলা দায়ের করেন। গত ১১ নভেম্বর বিজ্ঞ আদালতের আদেশে থানা পুলিশ বিরোধপূর্ণ ভুমির ওপর ১৪৪ ধারা জারি করে।
কিন্তু আদালতের মাধ্যমে পুলিশের জারি করা ১৪৪ ধারা অমান্য করে প্রতিপক্ষের আব্দুল মন্নান, আব্দুছ ছালাম গংরা গত ২৫ নভেম্বর রাতের আঁধারে ভাড়াটিয়া বাহিনী নিয়ে ১১ পরিবারের চলাচলের রাস্তাটি কেটে ফেলেছেন। এছাড়া রাস্তার উভয় পাশে লাগানো ২০ টি রেইনট্রি গাছও তারা কেটে লুট করে নিয়ে যায়।
সরেজমিনে গিয়ে বেশ কয়েকটি পরিবারের যাতায়াতের পুরনো রাস্তা কেটে ফেলা অবস্থায় দেখা গেছে। রাস্তার পাশের বিভিন্ন প্রজাতির গাছের মুতা ও মুতরা বেত পড়ে থাকতে ভুক্তভোগীরা জানান, রাত ২ টার দিকে আব্দুল মন্নান, আব্দুছ ছালাম গংরা অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত ৩০-৪০ জন ভাড়াটিয়া লোক নিয়ে তাদের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি কেটে ফেলে, গর্তের সৃষ্টি ও গাছগুলো কেটে লুট করে নিয়ে যায়। রাস্তা কাটার আগে তারা আমাদের প্রত্যেকের ঘরের দরজার বাহিরের কড়ায় আংটা লাগিয়ে দেয় যাতে আমরা বের হয়ে বাধা দিতে না পারি। তাদের হাল্লা চিৎকারে ঘুম থেকে জেগে প্রতিবেশীরা লুকিয়ে এসে দরজার কড়ার আংটা খুলে আমাদেরকে ঘর থেকে বের করেন। ভুক্তভোগী ছলিমা বেগম অভিযোগ করেন, রাস্তা ও গাছ কেটেই তারা ক্ষান্ত হয়নি। এখন হুমকি দিচ্ছে রাস্তার ভুমিতে তারা পুকুর খনন করবে।
এব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল মন্নানের স্ত্রী এছবা বেগম ও আব্দুছ ছত্তার জানান, ক্রয়সুত্রে তারা রাস্তাটির মালিক হন। আদালতে মামলা করে তারা রায় পেয়েছেন। তাদের ভুমির ওপরের রাস্তা ও গাছ রাতের আধারে কাটবেন না দিনে কাটবেন এটা তাদের ব্যাপার। এসব প্রশ্ন করার অধিকার সাংবাদিককে কে দিল বলে উল্টো প্রশ্ন রাখেন।
থানার ওসি মো. ইয়াছিনুল হক জানান, আদালতের নির্দেশে পুলিশ বিরোধপুর্ণ ভুমির ওপর ১৪৪ ধারা জারি করে। কোন পক্ষ ওই ভুমির ক্ষতি সাধন করলে অন্যপক্ষ সংশ্লিষ্ট আদালতকে অবহিত করতে পারেন। আদালত নির্দেশ দিলে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।