বড়লেখার দেওছড়া বালুমহাল থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:৩৫:১৫,অপরাহ্ন ২৩ নভেম্বর ২০১৯
আব্দুর রব,
বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের দেওছড়া বালু মহাল থেকে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন যাবত বালু তোলা হচ্ছে। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, বিনষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। বালুবাহী ট্রাক-ট্রাক্টর চলাচলে ভাঙ্গন দেখা দিচ্ছে ছড়া তীরবর্তী সরকারী-বেসরকারী রাস্তায়। বৃহস্পতিবার রাতে অবৈধ বালু পাচারকালে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী বালু ভর্তি একটি ট্রাক আটক করে থানায় সোপর্দ করেছে।
উপজেলার ছড়ারপারের পূর্ব সুজাউল (প্রকাশিত কাইতাবন), কায়স্থশাসন, বালিশকোণা, সুয়ারারতল ও একমাত্র অর্গানিক চা উৎপাদনকারী শাহবাজপুর চা বাগানের রাস্তাটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। স্থানীয় ও রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্থ না হওয়ার জন্য দেওছড়ার বালুমহাল রাজস্ব বিভাগ বন্দোবস্ত বন্ধ করেছে। কিন্তু এতেও বালু তোলা বন্ধ হয়নি। বরং প্রভাবশালীদের আশীর্বাদপুষ্ট বালিখেকোরা প্রতিনিয়ত লাখ লাখ টাকার বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। ফলে শুধু রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না, অর্গানিক চা উৎপাদনকারী শাহবাজপুর চা বাগানের বিভিন্ন স্থানের টিলা ধ্বসে চা বাগানের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে।
পরিবেশ সংরক্ষণের স্বার্থে দেওছড়া থেকে বালু তোলা বন্ধের জন্য শাহবাজপুর চা বাগানের জেনারেল ম্যানেজার লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, প্রভাবশালীদের আশীর্বাদপুষ্ট উপজেলার বিরাশি গ্রামের হোসেন, সুয়ারারতল গ্রামের সবুর, জামিল, ইমরান, বলাই মিয়া, বাহার, এপলু মিয়া, তারেক আহমদ, তোতা মিয়া, সুহেল, আব্দুল কুদ্দুছ প্রমুখ প্রতিদিন অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকার বালু তোলার পর বিক্রি করছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেওছড়ার বিভিন্ন স্থানে ৩ থেকে ৫-৬ জনের একেকটি গ্র“প অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে দেখা গেছে। বিভিন্ন স্পটে বালু স্তুপ করে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা বালু ক্রয় করে ট্রাক-ট্রাক্টর যোগে নিয়ে যাচ্ছেন। বালুর ট্রাক্টরে দেওছড়ার তীরবর্তী পিচ রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এছাড়া অবৈধ বালুবাহী যানবাহনে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়ির ব্যক্তিগত রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এ নিয়ে বালু পাচারকারী ও ভুক্তভোগীদের মধ্যে প্রায়ই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। স্থানীয় পরিবেশের উপর কু-প্রভাব ফেলবে এমন আশংকায় ভুক্তভোগীরা মিডিয়াসহ সকল পরিবেশবাদীদের সহযোগিতা কামনা করছেন।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার আনিছ আহমদ জানান, বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় এলাকাবাসী অবৈধ বালুভর্তি ৩টি ট্রাককে ধাওয়া করেন। ২টি ট্রাক পালিয়ে গেলেও ১টিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে জানান, দেওছড়া থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।