মাধবকুণ্ডের জলজপ্রাণী আশংকামুক্ত : বিষপ্রয়োগের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার ১
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:২৬:৪৫,অপরাহ্ন ০৬ নভেম্বর ২০১৯
আব্দুর রব, বড়লেখা : মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের পানি থেকে বিষাক্ততা কাটতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার ওষুধ প্রয়োগের ফলে পানি স্বাভাবিক হয়ে আসতে থাকে। বুধবার বিকেলে পানির গুনাগুন পরীক্ষা ও জীবিত মাছ ছেড়ে নিশ্চিত হয়েছে মৎস্য বিভাগ।
এদিকে পানিতে বিষপ্রয়োগের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইমাম উদ্দিন (৪২) নামে এক ব্যক্তিকে পুলিশ মঙ্গলবার রাতে উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউপির গৌড়নগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। তিনি ওই গ্রামের মৃত মস্তকিন আলীর ছেলে।
জানা গেছে, দুর্বৃত্তরা মাছ শিকার করতে মাধবকুণ্ডের ওপরের ছড়ায় পাহাড়ি লতা জাতীয় বিষ প্রয়োগ করায় জলপ্রপাতের নিচের জলাশয়ের পাহাড়ি বামাস মাছ, কাঁকড়া, পুঁটি, ব্যাঙ, পাহাড়ি চিংড়ি, পিপলা, ছোট বাইন, সরপুঁটিসহ বিভিন্ন ধরনের জলজপ্রাণী ও কীটপতঙ্গ মারা যায়। মরা মাছ পচে শনিবার থেকে কুণ্ডের পানি ও বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। এতে পর্যটকরা দুর্ভোগের শিকার হন। মাছের মড়ক টেকাতে ও পানির গুনাগুন স্বাভাবিক করতে মৎস্য বিভাগ মঙ্গলবার জলপ্রপাতের পানিতে রাসায়নিক ওষুধ প্রয়োগ করে।
মাধবকুণ্ড পুঞ্জির হ্যাডম্যান ওয়ানবর লংডং গিরি বুধবার দুপুরে বলেন, ‘বিষ প্রয়োগের পর থেকে আমরা ২-৩ দিন ঝর্ণার পানি ব্যবহার করতে পারিনি। আমরা অনেকটা হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ, ঝর্ণার পানি আমরা পান করি। এছাড়াও দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। তবে মঙ্গলবার ঝর্ণার পানিতে ঔষধ দেয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রশাসনের লোকজন জানিয়েছেন, এখন পানি ব্যবহার করা যাবে। এজন্য আজ থেকে পানি পান করতে পারছি। বিভিন্ন কাজেও ব্যবহার করছি।’
মাধবকুণ্ড পর্যটন সহায়ক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় ব্যবসায়ী কবির আহমদ জানান, গত ৩ দিন পর্যটকের কিছুটা অসুবিধা হয়। প্রতিদিনের মতো মাধকুণ্ডে পর্যটকরা বেড়াতে আসছেন। বুধবার কোন পর্যটক দুর্গন্ধের কথা বলেননি। জলপ্রপাতের পানিতে ঔষধ ছিটানোর পর থেকে তা এখন স্বাভাবিক হয়েছে। পানিতেও এখন কোনো গন্ধ নেই। বাতাসেও নেই।
বন বিভাগের বড়লেখা রেঞ্জের সহযোগী রেঞ্জ কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন দাস জানান, ‘এ ঘটনায় সোমবার তিনি থানায় জিডি করেন। পরে মঙ্গলবার মামলা করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বড়লেখা থানার উপ-পরিদর্শক মো. শরীফ উদ্দিন বুধবার সন্ধ্যায় জানান, ‘বিষপ্রয়োগের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. সুলতান মাহমুদ জানান, বুধবার পানি পরীক্ষা করে দেখা গেছে পানিতে আর বিষাক্ততা নেই। কিছু জীবিত মাছ ছেড়েও স্বাভাবিক চলাফেরা করতে দেখা যায়। এখন আর মাছসহ কোন জলজ প্রাণী মারা যাওয়ার আশংকা নেই।