শাহবাজপুরে লোকালয়ে বন্য বানরের উপদ্রব : আক্রমণের শিকার ৭, এলাকায় আতঙ্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:১১:১৪,অপরাহ্ন ২০ অক্টোবর ২০১৯
তারেক মাহমুদ:: বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর বাজার সংলগ্ন লোকালয়ে বানরের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বানরের আক্রমণের শিকার হয়ে এ পর্যন্ত অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন। দিনে দিনে বাড়ছে বানরের উপদ্রব। আক্রমণের শিকার হচ্ছেন নিরীহ সাধারণ মানুষ। এতে এলাকাবাসীর মাঝে দেখা দিয়েছে বানর আতঙ্ক। শিশুরা বানরের ভয়ে স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। বানরের ভয়ে তটস্থ রয়েছেন বড়রাও।
শাহবাজপুরের বাসিন্দা বিশিষ্ট সমাজসেবক রফিক উদ্দিন আহমদ জানান, ‘আগে ১টি বানর দেখা যেত, নিরীহ টাইপ, তেমন উৎপাত করতো না। সে বাজার এলাকায় ঘোরাফেরা করত। কিন্তু এখন একে একে ৬টা বানরের আবির্ভাব ঘটেছে । পথে-ঘাটে আক্রমণ করে বসে। ঘরে ডুকে ভাত তরকারী নিয়ে যাচ্ছে। জিনিষপত্র নষ্ট করতেছে। বাজারে এমনভাবে চলাচল করে যে কোনো দিকে ভ্রূক্ষেপ করে না। মানুষ আতঙ্কিত।’
গতকাল শনিবার (১৯ অক্টোবর) ভোরে মসজিদ থেকে ফজরের নামাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে শাহবাজপুর বাজার সংলগ্ন রাজপুর এলাকায় বানরের আক্রমণের শিকার হয়ে মারাত্মক আহত হন সায়পুর গ্রামের মো. আব্দুল্লাহ(৩০)। পরে এলাকার লোকজনের সহায়তায় উদ্ধার করে তাকে বিয়ানীবাজার সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ছবিটি শাহবাজপুর বাজার এলাকা থেকে তোলা।
এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে শাহবাজপুর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ কনস্টেবল মাসুদ আহমদ, সায়পুর গ্রামের মাতাবুর রহমান ও আমান আহমদ, রাজপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস, পূর্ব দৌলতপুর গ্রামের ছুরুতুন, স্টেশনবাজারের সুলেমান আহমদসহ অনেকেই বানরের আক্রমণের শিকার হয়েছেন।
কিছুদিন আগে বানরের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকার কিছু লোকজন মিলে একটি বানরকে কৌশলে আটক করে সীমান্তবর্তী পাল্লাথল বাগান এলাকায় জংগলে ছেড়ে দিয়ে আসেন। কিন্তু কদিন পর বানরটি আবারও লোকালয়ে ফিরে আসে। এলাকাবাসী জানান, বর্তমানে শাহবাজপুর বাজার, সায়পুর, রাজপুর ও পূর্ব-দৌলতপুর এলাকায় লোকালয়ে ৬টি বানর বিচরণ করতে দেখা যায়। বানর কারো বাসায় ঢুকে খাবার ,কাপড়- চোপড় নিয়ে যায়, বাজার থেকে কেউ কিছু কিনে নিচ্ছে , হঠাৎ এসে আক্রমণ করে বসে। এতে এলাকায় মানুষের মধ্যে বানর আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
রাজপুর গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল আহমদ জয় জানান, আমার মেয়েটা বানরের ভয়ে মক্তবে পড়তে যেতে চায় না। রাতে নিজেও অনেকটা আতঙ্ক নিয়ে চলাফেরা করতে হয়।
শাহবাজপুর বাজারের ব্যবসায়ী জামাল আহমদ জানান, ভোরে হাটাহাটি করা দীর্ঘদিনের অভ্যাস কিন্তু বানর আতঙ্কে এখন আর বের হই না। বানর কয়েকদিন আগে ভোরে একজনকে আক্রমণ করে রক্তাক্ত করেছে।
সায়পুর গ্রামের বাসিন্দা মডেল কিন্ডার গার্টেনের প্রধান শিক্ষক আহমেদ রুয়েল জানান, বানর বন্যপ্রাণী। লোকালয় থেকে তাদের বনে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাই।
বানরের উপদ্রব বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আহমদ জুবায়ের লিটন বলেন,সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আমরা অবগত করেছি। তাঁরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তিনি বানরকে না ক্ষেপনোর জন্য সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
বনবিভাগের বড়লেখা রেঞ্জের সহযোগী কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন দাস জানান, আমাদের অফিসে বানর ধরার কোন যন্ত্রপাতি নেই। বিষয়টি মৌলভীবাজার বন্য প্রাণী রেঞ্জের সহকারী কর্মকর্তার কাযালয়ে অবগত করেছি।্আগামীকাল শাহবাজপুরে গিয়ে সরেজমিনে পরদর্শন করব।