বেতন বৈষম্য : কর্মবিরতি পালন করলেন বড়লেখার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:২০:০৩,অপরাহ্ন ১৬ অক্টোবর ২০১৯
বিশেষ প্রতিবেদক , বড়লেখা :: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ২য় দিনের মতো তিন ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করা হয়। এর আগের দিন সোমবার সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত দুই ঘন্টা কর্মবিরতি চলে। কর্মবিরতি চলাকালে বেশিরভাগ স্কুলের শিক্ষকরা শ্রেণী কক্ষে পাঠদান বন্ধ রাখেন।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে বসে আছেন। শিক্ষার্থীরা ক্লাসে বসে অলস সময় পার করছে। কারণ জানতে চাইলে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘শিক্ষকরা ক্লাসে আসছেন না, ক্লাস বন্ধ। তাই আমরা ক্লাসে বসে গল্পগুজব করে সময় পার করছি।’ শিক্ষকরা পাঠদান বন্ধ করায় বিপাকে রয়েছেন পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনীর শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, সারা দেশের ন্যায় বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ বড়লেখা উপজেলা শাখার ব্যানারে বিভিন্ন দাবিতে এই কর্মবিরতি শুরু হয়। দাবিগুলো হচ্ছে- প্রধান শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম ও সহকারি শিক্ষকদের ১৪তম গ্রেড থেকে ১১তম গ্রেড নির্ধারণ করা। দাবি মানা না হলে বুধবার (১৬ অক্টোবর) অর্ধদিবস ও বৃহস্পতিবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া দাবি আদায় না হলে ২৩ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের মাধ্যমে শিক্ষক সংগঠন তাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে।’
এই বিষয়ে সহকারি শিক্ষক সমিতি বড়লেখা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বদরুল ইসলাম বলেছেন, ‘এটা মর্যাদা বৃদ্ধির আন্দোলন। বেতন বৃদ্ধির আন্দোলন নয়। প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকদের বেতন বৈষ্যম তিন ধাপ। এটা কোনোভাবেই মানা যায় না।’
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি বড়লেখা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মীর মুহিবুর রহমান বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের ১০ম এবং সহকারি শিক্ষকের ১১তম গ্রেডের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এবার আমরা চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নেমেছি। দাবি মানা না হলে কঠোর আন্দোলন হবে।’
বাংলাদেশ প্রধান শিক্ষক সমিতি বড়লেখা শাখার সভাপতি বদর উদ্দিন বলেন, ‘চলমান আন্দোলন ও দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। কর্মবিরতি ও পরবর্তী যে কোনো আন্দোলনে আমাদের নৈতিক সমর্থন রয়েছে।’
বড়লেখা উপজেলা মোহাম্মদনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ বৈষ্যম নিরসন ও মর্যাদা বৃদ্ধির দাবিকে বারবার অবহেলা করছেন। এ জন্য কর্মবিরতি ও আন্দোলন ছাড়া শিক্ষকদের আর কোনো বিকল্প নেই। তবে দাবি মেনে নেওয়া হলে পাঠদানে শিক্ষার্থীদের সাময়িক ক্ষতি বিশেষভাবে পুষিয়ে নেওয়া হবে।’