সুইসাইড নোট থেকে জানা গেলো গণধর্ষণের শিকার হয়ে তরুণীর আত্মহত্যা!
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৪০:৫১,অপরাহ্ন ১৬ অক্টোবর ২০১৯
বড়লেখার ডাক ডেস্কঃ বিশ্বনাথে দাফনের ২দিন পর মে’য়ের ভ্যানেটি ব্যাগ থেকে মা খুঁজে পেলেন একটি ‘চিরকুট বা সুইসাইড নোট’। আর সেই সুইসাইড নোট থেকেই জানা গেলে আত্মহত্যা করার পূর্বের রাতেই (গত ৯ অক্টোবর) দক্ষিণ সুরমা উপজে’লার তেতলী ইউনিয়নের চেরাগী গ্রামস্থ বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লালটেক গ্রামের শুকুর আলীর মেয়ে পপি বেগম (১৯) গণধ’র্ষণের শিকার হয়ে ছিলো।
আর গণধর্ষণের শিকার হওয়াতে লোকলজ্জার ভয়ে পর দিন (১০ অক্টোবর) নিজের বাড়িতে ফিরে পরিবারের সকলের অজান্তে আত্মহ’ত্যা করে পপি। আর ওই দিন বিকেলে নিজ বসতঘর থেকে পপির ঝুলন্ত লা’শ উ’দ্ধার করে পু’লিশ। তবে গণধ’র্ষণের ব্যাপারে কাউকে কিছুই বলেনি সে। তবে কৌশলে নিজের ভ্যানেটি ব্যাগে রেখে গেছে সুই’সাইড নোট বা চিরকুটটি।
গণধ’র্ষণের শিকার হওয়াতেই পপি লোকলজ্জার ভ’য়ে আত্মহ’ত্যা করেছে একটি বিশ্বস্ত সূত্রে এমন সংবাদ পেয়ে রবিবার দুপুরে বিশ্বনাথের স্থানীয় সাংবাদিকদের একটি দল পপির নিজ বাড়িতে যান। পপির পরিবারের সদস্যদের আলাপকালে পপির মা জ্যোৎসনাা বেগম তার (পপি) ভ্যানেটি ব্যাগে সুই’সাইড নোট বা চিরকুটটি পাওয়ার সত্যতা সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেন। পপির চিরকুট অনুযায়ী তার আত্মহ’ত্যার কারণ পরিবারের লোকজন থা’না পু’লিশকে অবহিত করেছেন।
পপির রেখে যাওয়া সুই’সাইড নোট বা চিরকুট থেকে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন গত বুধবার (৯ অক্টোবর) দিবাগত রাতে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজে’লার তেতলী ইউনিয়নের চেরাগী গ্রামস্থ বড় বোনের শ্বশুড় বাড়িতে অবস্থানকালে বাথরুমে যাওয়ার জন্য পপি বেগম ঘরের বাহিরে যায়। তখন পূর্ব থেকে সেখানে উৎপেতে থাকা দুই ব্যক্তি তাকে জো’রপূর্বক অন্যত্র উঠিয়ে নিয়ে যায়। এরপর পপির মুখ, হাত ও পা বেঁধে মা’রধর করে রাতভর পালাক্রমে গণধ’র্ষণ করা হয়। এরপর ভোররাতে পুনঃরায় পপিকে তার বোনের বাড়িতে (যেখান থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয়, সেই স্থানে) ফেলে রেখে যায় ওই দুই ব্যক্তি। তবে ওই দুই জনকে পপি চিনতে পেরেছে এবং তাদের নামও সুই’সাইড নোটে উল্লেখ করেছে।
নি’হতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পপি বেগম গত রবিবার বেড়াতে যায় বড় বোন হেপি বেগমের স্বামীর বাড়ি দক্ষিণ সুরমা উপজে’লার তেতলী ইউনিয়নের চেরাগী গ্রামে। সেখান থেকে রবিবার তাকে বাড়িতে নিয়ে আসার কথা থাকলেও। গত বৃহস্পতিবার সকালে পপি নিজ বাড়িতে চলে আসতে কা’ন্না কাটি শুরু করে। একপর্যায়ে তাকে ওই দিন দুপুরে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন ভগ্নিপতি ফয়জুল ইস’লাম। এরই মধ্যে ফয়জুল ইস’লামের বড় ভাই নুরুল ইস’লাম তেতলী পয়েন্টে গিয়ে লোকমুখে জানতে পারেন তার ভাইয়ের শালিকা পপিকে সারা রাত বাহিরে পেয়ে স্থানীয় চেরাগী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) নামের এক যুবক বাড়িতে পৌছে দেয়।
এমন সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক লালটেক গ্রামের পপির বাড়িতে ছুটে আসেন নুরুল ইস’লাম এবং তিনি পপির সাথে একান্তে আলাপ করে রাতে কোন ঘটনা ঘটেছে কি না তা জানতে চান। কিন্ত পপি তাকে কিছুই না বলায় তিনি নিজ বাড়িতে ফিরে গিয়ে শুনতে পান পপি আত্মহ’ত্যা করেছে। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে থা’না পুলিশ লা’শ উ’দ্ধার করে ম’র্গে প্রেরণ করে। এরপর ময়না ত’দন্ত শেষে পরদিন শুক্রবার নি’হতের দাফন সম্পন্ন করা হয়।
এ ব্যাপারে নি’হতের মা জ্যোৎসনা বেগম জানান, রবিবার মে’য়ে পপি বেগমের ব্যবহৃত ভ্যানেটি ব্যাগ হাতে নিয়ে মে’য়ের রেখে যাওয়া স্মৃ’তি দেখতে গিয়ে ওই ব্যাগের মধ্যে পপির নিজ হাতে লেখা একটি কাগজ দেখতে পান। এসময় প্রতিবেশী লোকজনকে ডেকে কাগজটি পড়তে বলেন। তখন জানতে পারেন গণধ’র্ষণের শিকার হয়ে লোকলজ্জার ভ’য়ে পপি আত্মহ’ত্যা করেছে।বিশ্বনাথ থা’নার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম মু’সা বলেন, নি’হতের পরিবারের মৌখিক অ’ভিযোগ আম’রা পেয়েছি। তবে তা খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।