বড়লেখা ফৌজদারী চৌকি আদালতে দেওয়ানী আদালত স্থাপনের দাবী: উপকৃত হবে জুড়ী-বড়লেখার ৫ লাখ মানুষ
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:৩০:২৯,অপরাহ্ন ১৪ অক্টোবর ২০১৯
আব্দুর রব , বড়লেখা :: মৌলভীবাজারের বড়লেখা ফৌজদারী চৌকি আদালতে দেওয়ানী আদালত স্থাপন এবং পার্শ্ববর্তী জুড়ী উপজেলা ও থানার মামলাগুলো অত্র আদালতে পরিচালনার দাবীতে বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার বিচারপ্রার্থী জনসাধারণ সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি বরাবরে আবেদন করেছেন।
জানা গেছে, আশির দশকের প্রথম দিকে তৎকালিন সরকার প্রশাসনিক বিবেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে সারা দেশের প্রত্যেক উপজেলায় ফৌজদারী ও দেওয়ানী আদালত স্থাপন করে। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে সরকার পরিবর্তনের সাথে উপজেলা কোর্ট প্রত্যাহার করায় বিচারপ্রার্থীরা পড়েন মহা-দুর্ভোগে। বাধ্য হয়েই সংশ্লিষ্টরা ৭০-৮০ কি. মিটার দুরবর্তী জেলা সদরের আদালতের শরনাপন্ন হন। এতে বিচারপ্রার্থী জনসাধারণের অর্থ ও সময় ব্যয়ের পাশাপাশি দুর্ভোগেরও শিকার হতে হচ্ছে। ২০০৫ সালে সরকার দেশের সীমান্তবর্তী ৯ উপজেলায় পুনরায় ফৌজদারী চৌকি আদালত স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সে অনুযায়ী ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর থেকে বড়লেখা ফৌজদারী চৌকি আদালতে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু দেওয়ানী আদালতের কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষের দেওয়ানী মামলার প্রয়োজনে ৭০-৮০ কি. মিটার দুরে জেলা সদরের আদালতে যেতে নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে।
এদিকে বড়লেখা ফৌজদারী চৌকি আদালত হতে জুড়ী উপজেলা সদরের দুরত্ব ১০ থেকে ১৫ কি. মিটার। অন্যদিকে মৌলভীবাজার জেলা সদরের দুরত্ব ৫৫ থেকে ৭০ কি. মিটার। জুড়ী থানা পুলিশের গ্রেফতারকৃত যেকোন আসামীকে জেলা সদরের আদালতে সোপর্দ করতে হচ্ছে। এছাড়া থানা ও উপজেলার মামলা সংক্রান্ত যেকোন প্রয়োজনে জেলা সদরের আদালতে যেতে বিচারপ্রার্থী ও পুলিশের সময় ক্ষেপনসহ নানা ঝুঁকির আশংকা থাকে। এক্ষেত্রে জুড়ী থানার মামলাগুলো বড়লেখা ফৌজদারী চৌকি আদালতে সম্পৃক্ত করলে বিচারপ্রার্থীদের নানা সুবিধার পাশাপাশি থানা পুলিশের সময় ব্যয়, শ্রম ও ঝুঁকির আশংকা অনেকাংশেই কমে যাবে। যদিও থানা পুলিশের গ্রেফতারকৃত আসামীকে নিকটস্থ আদালতে সোপর্দ করার কথা আইনে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে। এছাড়া বড়লেখা ফৌজদারী চৌকি আদালতের সাথে দেওয়ানী আদালত স্থাপন করে জুড়ী উপজেলাকে সম্পৃক্ত করলে বিচারপ্রার্থীদের সুবিধার পাশাপাশি জেলা সদরের আদালতের মামলা জটও অনেকাংশে কমবে।
বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়েল ম্যাজিস্ট্রেট (ফৌজদারী চৌকি) আদালতের এপিপি গোপাল দত্ত, সিনিয়র আইনজীবি দিপক কুমার দাস, সুব্রত কুমার দত্ত, হারুন অর রশীদ, ইয়াছিন আলী, জিল্লুর রহমান, আফজল হোসেন প্রমূখ জানান, মৌলভীবাজার-১ সংসদীয় আসনটি যেহেতু বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আদালতে দেওয়ানী কোর্ট স্থাপন ও চৌকি আদালতের সাথে জুড়ী থানার মামলাগুলো সংযুক্ত করে বিচারকার্য পরিচালনা করলে দুই উপজেলার ৫ লক্ষাধিক জনসাধারণ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন।