বড়লেখায় ২ মাসেও পৌঁছেনি সিলেট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের উপনথি, বিচারপ্রার্থীর দুর্ভোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:২২:২৪,অপরাহ্ন ০১ অক্টোবর ২০১৯
আব্দুর রব, বড়লেখা :: বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের একটি মামলায় সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের গ্রেফতার আসামীর উপ-নথি গত ২ মাস ১০ দিনেও সিলেট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত হতে বড়লেখায় পৌঁছায়নি ! এতে হাজতি ওই আসামীর জামিন শুনানী করা যায়নি। স্বামীর জামিন করাতে দীর্ঘদিন চরম দুর্ভোগ পোহান হাজতির স্ত্রী হতদরিদ্র রেশমা বেগম। অবশেষে সোমবার বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হরিদাস কুমার মৌলভীবাজার কারাগারে থাকা আসামী লিটন মিয়াকে ন্যায় বিচারের স্বার্থে সিডব্লিউ জারি করে আদালতে তলব করেছেন। উপ-নথি গায়েবের এ ঘটনায় আদালত সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীলতা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা গেছে, বড়লেখা সিনিয়ির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে রুজু করা জি.আর-১৫৯/১০(বড়লেখা) মামলার ২ নং আসামী সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার যুধিষ্টীপুর গ্রামের আফতাব আলীর ছেলে লিটন মিয়া (২৫)। নিয়মিত হাজিরা না দেয়ায় গত ২ এপ্রিল আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন। ২২ জুলাই ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে পরদিন সিলেট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রে কাউছার আহমদের আদালতে সোপর্দ করে। মামলার মুল নথি বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রে আদালতে থাকায় সিলেট চিফ জু.ম্যা. আদালত উপ-নথি সৃজন করে আসামী লিটন মিয়াকে মৌলভীবাজার জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন। ওই দিনই উপ-নথিটি সংশ্লিষ্ট আদালতে প্রেরণের কথা থাকলেও ২ মাস ১০ দিনেও তা বড়লেখা আদালতে পৌছেনি। এতে হাজতি আসামীর জামিন প্রার্থনা আটকা পড়ে।
ভুক্তভোগী রেশমা বেগম জানান, তিনি নাবালক ৫ সন্তানের জননী অত্যন্ত দরিদ্র মহিলা। দিনমজুরী করে স্বামী সংসার চালাতেন। স্বামীকে পুলিশ গ্রেফতারের পর সিলেট চিফ জুডি. ম্যা. আদালতে গেলে কোর্ট দারোগা বলেন নথি পাঠিয়ে দিয়েছেন। বড়লেখা কোর্টে গেলে সেখানের পুলিশ জানায় পৌছেনি। ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে সিলেট কোর্ট, মৌলভীবাজার জেলখানা আর বড়লেখা কোর্টে অন্তত ১৪-১৫ বার দৌঁড়াদৌঁড়ি করে তিনি নিঃস্ব হয়ে গেছেন। কিন্তু উপ-নথি বড়লেখা আদালতে না পৌঁছায় স্বামীর জামিন প্রার্থনা করতে পারছেন না। তার অভিযোগ সিলেট চিফ জুডি. ম্যাজি. কোর্টের সংশ্লিষ্ট দারোগাকে চাহিদা মতো খুশি করতে না পারায় তিনি উপ-নথি আটকিয়ে তাকে চরম হয়রানী করেছেন।
হাজতি আসামী লিটন মিয়ার নিয়োজিত আইনজীবি অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান জানান, একাধিকবার তিনি আদালতে জামিনের প্রার্থনা করেন। কিন্তু সিলেট চিফ জুডি. ম্যাজি. আদালতের উপ-নথি বড়লেখা সি. জুডি. ম্যাজি. আদালতে না পৌছায় জামিন শুনানী সম্ভব হয়নি। হাজতির স্ত্রী হতদরিদ্র রেশমা বেগম গত ২ মাস ১০ দিন ধরে স্বামীর জামিনের জন্য একাধিকবার সিলেট, মৌলভীবাজার ও বড়লেখায় ধর্না দিয়ে সর্বশান্ত হয়ে গেছেন। তবে সোমবার বিজ্ঞ আদালত মানবিক কারণ বিবেচনায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে উপ-নথি ছাড়াই হাজতি আসামীকে সিডব্লিউ জারি করে আদালতে তলব করেছেন।
বড়লেখা সি. জুডি. ম্যাজি. আদালতের সিএসআই মজিবুর রহমান জানান, লিটন মিয়ার গ্রেফতার সংক্রান্ত উপ-নথির জন্য সিলেট চিফ জুডি. ম্যা. আদালতের জিআরও এবং সিএসআই’র সাথে অনেকবার যোগাযোগ করলে তারা জানায় উপ-নথি অর্ডিনারী ডাকে পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ২ মাস ১০ দিনেও তা বড়লেখা কোর্টে পৌঁছেনি।