জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উদ্বোধনের ১ বছরের মধ্যেই ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৩৫:২৮,অপরাহ্ন ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯
ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ কি-না পরীক্ষা-নিরীক্ষার দাবী
আব্দুর রব, বড়লেখা :: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উদ্বোধনের ১ বছরের মধ্যেই ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। যদিও এর প্রায় ৬ পূর্বে ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। স¤প্রতি ছোট-বড় ফাটলের সৃষ্টি হলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ফাটলের কয়েকটি স্থান পলেস্তারা করে দিয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের বাছিরপুর এলাকায় মৌলভীবাজার-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম পাশে সরকারের অধিগ্রহণকৃত ৫ একর জমিতে ৪ তলা ভিতবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নির্মিত হয়েছে। ২০১৩ সালের ৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ভূমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ভবনের নির্মাণ কাজ স¤পন্ন ও হস্তান্তর বিলম্বিত হয়। গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে ঢাকার বনানী এলাকার ‘এস আলী অ্যান্ড সন্স’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এটি নির্মাণ করেছে। এতে ব্যয় হয়েছে সরকারের প্রায় ২০ কোটি টাকা। নির্মাণকাজ সম্পন্নের পর ২০১৭ সালের ২৩ ডিসেম্বর ভবনটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানে বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগের কার্যক্রম চলছে।
সরেজমিনে বুধবার গিয়ে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ও পিছনের দেয়ালের নিচের বিভিন্ন স্থানে আঁকাবাঁকা ফাটল। কমপ্লেক্স ভবনের সামনের চেয়ে উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ অংশের ফ্লোর ও দেয়ালের সংযোগস্থলে বড় আকারের ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি স্থান পলেস্তারা করে ঢেকে দেয়া হয়েছে। ঢেকে দেয়া স্থানেও পুনরায় ফাটল দেখা দিয়েছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত কয়েকজন কর্মচারী জানান, এখানে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরুর পর থেকে ফাটলগুলো তাদের চোখে পড়েছিল। এরপর ঠিকাদারের লোকজন কিছু জায়গায় পলেস্তারা করেছে। অনেক জায়গায় এখনও বড় বড় ফাটল রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নির্মাণকাজে ত্রæটির কারণেই এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ভবনটি ঝুঁকির মধ্যে কি না তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন।
উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সমরজিৎ সিংহ জানান, তিনি অল্পদিন হয়েছে এখানে দায়িত্ব নিয়েছেন। তার পূর্ববর্তী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মহিউদ্দিন আহমদ হাসপাতাল ভবনের ফাটলের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন। পরবর্তীতে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না তার জানা নেই। তবে তিনি নতুন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক আবু তাহের জানান, নিচু জায়গায় মাটিভরাট করে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। মাটি দেবে ফাটল দেখা দিতে পারে। এটা বড় ধরনের কোনো সমস্যা নয় বলে দাবি করেন।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম পাটান জানান, তিনি এ স্টেশনে যোগদানের আগেই জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। পলেস্তারার কাজে সমস্যার কারণে ভবনের কোন অংশে ফাটল দেখা দিতে পারে। আবার কাঠামোগত সমস্যার কারণেও তা হতে পারে। সরেজমিনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া কিছু বলা যাবে না। খোঁজ নিয়ে এব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন।