বড়লেখায় জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট: অবৈধ হাটের কারণে লোকসানের আশংকায় ইজারাদাররা
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৫৮:২০,অপরাহ্ন ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯
তারেক মাহমুদ :: পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে মৌলভীবাজারের বড়লেখায় জমে ওঠেছে কোরবানির পশুর হাট। ভালো দামে পশু বিক্রি করতে হাটে ভিড় করছেন বিক্রেতারা। তেমনি পছন্দের গরু কিনতে আগ্রহের কমতি নেই ক্রেতাদের। তবে হাটে পর্যাপ্ত দেশি গরু ও ছাগলের আমদানি থাকলেও বিক্রেতারা বেশি দাম হাঁকছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। স্বাভাবিক বাজার দরের তুলনায় প্রতিটি গরু ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তারা। এদিকে ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে বড়লেখার বিভিন্নস্থানে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অবৈধ পশুর হাট গড়ে ওঠাতে বড় ধরনেরলোকসানের আশংকা করছেন বৈধ পশুর হাটের ইজারাদাররা। অবৈধ এসব হাট বন্ধ করতে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন বড়লেখা পৌরসভার পশুর হাটের ইজারা দাতা পৌর মেয়র আবুল ইমাম মোঃ. কামরান চৌধুরী।
বুধবার (০৭ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে বড়লেখা উপজেলার সরকারী তালিকাভুক্ত ঐতিহ্যবাহী শাহবাজপুর বাজারের পশুর হাটে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বিক্রেতারা সারি সারি গরু সাজিয়ে রেখেছেন। নির্ধারিত বাজেটের মধ্যে গরু কিনতে হাট ঘুরে দেখছেন ক্রেতারা। ছোট ও মাঝারি সাইজের গরুর সরবরাহই বাজারে বেশি। হাটে আগত কয়েকজন ক্রেতা জানান, দাম এখনো খুব চড়া তবে শাহবাজপুরের পশু হাটের সব থেকে ভালো দিক হচ্ছে গরুগুলো স্বাভাবিকভাবেই মোটা-তাজা করা হয়েছে। বাজারের ইজারাদার এম. জুবের আহমদ জানান, হাটে পর্যাপ্ত দেশি গরু-ছাগলের আমদানি হলেও ক্রেতা উপস্থিতি কম। আশানুরূপ বিকিকিনিও নাই।
শাহবাজপুর বাজারের পশুর হাটে ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম নিয়ে উপস্থিত বড়লেখা উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আশরাফুল আলম খান বলেন, সুস্থ এবং পুষ্টিমান সম্পন্ন পশু পাওয়ার জন্য আমরা প্রাণীসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে উপজেলার সবকটি কোরবানির হাট তদারকি করছি।
এদিকে ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় যত্রতত্র অবৈধ পশুর হাট গড়ে উঠেছে। এতে বৈধ পশুর হাটের ইজারাদাররা লোকসানের আশংকা করছেন। অবৈধ এসব হাট বন্ধ করতে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন বড়লেখা পৌরসভার পশুর হাটের ইজারা দাতা পৌর মেয়র আবুল ইমাম মোঃ. কামরান চৌধুরী।
জানা গেছে, বড়লেখায় সরকারী তালিকাভুক্ত তিনটি স্থায়ী পশুর হাট রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- পৌরসভার পশুর হাট, চান্দগ্রাম বাজার ও শাহবাজপুর বাজার। প্রতি বছর উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এসব হাট ইজারা দেন। কিন্তু ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় অসাধু চক্র উপজেলার দক্ষিণভাগ, রতুলি, কাঠালতলী, আজিমগঞ্জসহ বিভিন্ন স্পটে অস্থায়ী পশুর হাট বসিয়ে দেয়। এতে বৈধ হাট বাজারের ইজারাদাররা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হন।
এছাড়া অবৈধ গরুর হাট বসানো নিয়ে প্রায়ই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও অবনতি ঘটে। অসাধু চক্রটি এবার নতুন করে ছিদ্দেক আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে পশুর হাট বসিয়েছে। এতে পৌর পশুর হাটের ক্ষতি ছাড়াও স্কুল মাঠেরও ক্ষতি হচ্ছে। এ হাট বসানো নিয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও অবনতির আশংকা রয়েছে। বড়লেখায় গজে উঠা অসংখ্য অস্থায়ী পশুর হাট বন্ধ
করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার দাবীতে পৌর মেয়র আবুল ইমাম মোঃ কামরান চৌধুরী গত ৪ আগস্ট জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন। মেয়র জানান, এভাবে অবৈধ অস্থায়ী পশুর হাট বসলে আগামীতে পৌরসভা পশুর হাটের ইজারায় কাঙ্ক্ষিত দর পাবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ শামীম আল ইমরান জানান, অস্থায়ীভাবে পশুর হাট বসানোর নিয়ম রয়েছে। তবে আগ্রহীদের আবেদন করতে হবে। দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ও কাঠালতলীতে অস্থায়ী পশুরহাটের জন্য দুইটি আবেদন পাওয়া গেলেও কাউকে অনুমোদন দেয়া হয়নি। অবৈধ পশুরহাটের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।