দানবীয় টিউমার অপসারণের পর সুস্থ হয়ে উঠছে বড়লেখার শিশু তামিম
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৪৪:৩২,অপরাহ্ন ১৩ জুলাই ২০১৯
নবজাতক সন্তানের মুখ দেখে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন পৃথিবীর সব মা-বাবাই। কিন্তু প্রকৃতির বিচিত্র খেয়ালখুশিতে মাঝে মধ্যে এর বিপরীতটাও ঘটে। যাতে আনন্দের পরিবর্তে শিউরে উঠতে হয়। আজ থেকে ঠিক সাড়ে চার মাস আগে এমনটাই ঘটেছিল বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের নান্দুয়া গ্রামের দরিদ্র ফারুক উদ্দিন ও হাজেরা বেগম দম্পতির জীবনে। মাথায় দানবীয় আকৃতির টিউমার নিয়ে জন্ম নেওয়া নবজাতক সন্তান তামিমকে দেখে শিউরে উঠেছিলেন তারা। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন দ্রুত এ টিউমার অপসারণ করা না গেলে শিশু তামিমের মৃত্যু নিশ্চিত।
অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দানবীয় এ টিউমার অপসারণের আড়াই মাস পর সেই তামিম এখন বাড়িতে অনেকটাই স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে জন্মের মাত্র আড়াই মাসের মধ্যেই তার মাথায় এক জটিল অস্ত্রোপচার চালিয়ে প্রায় ৩ কেজি ওজনের এই টিউমার অপসারণ করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগ।
অস্ত্রোপচার পরবর্তী চিকিৎসা শেষে গত ২৭মে হাসপাতালের ছাড়পত্র পেয়ে বাড়িতে নিয়ে আসা হয় তামিমকে। ফলোআপের জন্য ৪ সপ্তাহ পর পর তাকে সিলেটে নিয়ে যেতে হয়। ধারবাহিক চিকিৎসায় তার অবস্থার দ্রুত উন্নতি হচ্ছে বলেন জানান পরিবারের সদস্যরা। এদিকে অপারেশনের পর তামিমের শারীরিক অবস্থার এমন দ্রুত উন্নতির বিষয়টাকে অনেকটা অভাবনীয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা।
আজ শনিবার(১৩জুলা) দুপুরে সরিজমিনে ফারুক উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তামিম বিছানায় শুয়ে স্বাভাবিক শিশুর মতোই হাত পা ছড়িয়ে খেলছে। টিউমার অপারেশন করা স্থানটির ক্ষতচিহ্নও ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে। তার স্বাভাবিক হাত-পা নাড়া, মুখ দিয়ে শীষ দেয়া ইত্যাদি দেখে বুঝার উপায় নেই যে -মাত্র কিছুদিন আগে মৃত্যুর দোয়ার থেকে ফিরে এসেছে শিশুটি।
তামিমের চিকিৎসা কেমন চলছে জানতে চাইলে হাজেরা বেগম বলেন, চেয়ারম্যান কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে নিয়মিত ঔষধপত্র এবং চিকিৎসার খরচ দেয়া হয়।বাচ্চাটা নিয়া বড় বিপদের মাঝে পড়েছিলাম।চেয়ারম্যান লিটন সাহেব নিজে এসে ছেলেটার দায়ীত্ব নেয়ায় আমার চিন্তা দূর হয়েছে।
তিনি বলেন, ডা. আব্দুল ছালাম সাহেব সহ যারাই আমার ছেলের চিকিৎসায় সহযোগিত করেছেন আল্লাহ সবাইকে ভালো রাখুক।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালের সাবেক উপ-পরিচালক, ডা.আব্দুস ছালাম বলেন, ঠিক সময়মত অপারেশন না করা হলে এই শিশু নির্ঘাত মারা যেত । এটা জটিল কেস । নিউরো সার্জারি বিভাগ অনেক ঝুঁকি নিয়ে এই অপারেশনটা করেছে । এতটা দ্রুত উন্নতি হবে আশা করিনি । সব আল্লাহর ইচ্ছা।