ভূমধ্যসাগরে ট্রলারডুবি: বড়লেখায় ৬ মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে মামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:০০:৪৮,অপরাহ্ন ০৮ জুলাই ২০১৯
মামলার আসামীরা হলেন- চিহ্নিত মানব পাচারকারী বড়লেখা উপজেলার বোয়ালী গ্রামের মৃত আনফর আলীর ছেলে নাসির উদ্দিন, তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, বিয়ানীবাজার উপজেলার পেনগ্রামের মৃত জুয়াইদ আলীর ছেলে বদরুল হোসেন, সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার কাটলিপাড়া গ্রামের চমক আলীর ছেলে রফিক উদ্দিন, লিবিয়ায় অবস্থানকারী তার ছেলে পারভেজ আহমদ, বড়লেখার ভবানীপুর গ্রামের আসাব আলীর ছেলে নুরুল হক।
মামলার এজাহারে ভুমধ্যসাগরে ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ জুয়েলের বাবা জামাল উদ্দিন অভিযোগ করেন, স্থানীয় দালাল নাসির উদ্দিন তার ছেলে জুলেকে বিমান যোগে ইটালি পাঠানোর কথাবার্তা বলে বিয়ানীবাজারের দালাল বদরুল হোসেনকে বাড়িতে নিয়ে আসে। দুই ধাপে ইটালি পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারবে জানিয়ে ভিসা, টিকেটসহ অন্যান্য খরচ বাবত ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা তারা নির্ধারণ করে।
লিবিয়া পৌছার পর ৫ লাখ এবং ইটালি পৌছার পর ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা নেয়ার কথা হলেও সঙ্গবদ্ধ আদম বেপারি চক্র তার ছেলে জুয়েলকে লিবিয়ায় জিম্মি অবস্থায় রেখে বিভিন্ন কৌশলে ১১ লাখ ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। লিবিয়া থেকে ইটালিতে বিমান যোগে না পাঠিয়ে অবৈধ পথে নৌকা যোগে পাঠাতে গিয়ে গত ১০ মে ভুমধ্যসাগরে নৌকা ডুবিতে বিভিন্ন দেশের শতাধিক মানুষ মারা যায়।
এরমধ্যে ৩৭ জন বাংলাদেশিকে সনাক্ত করা হয়। কিন্তু এরমধ্যে জুয়েলের সন্ধান মিলেনি। এরপর থেকে নিখোঁজ জুয়েলের খবর জানতে দালাল নাসির ও বদরুলের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জুয়েল ভাল আছে বলে জানায়। ছেলেকে দেশে এনে দেয়ার কথা বললে বাংলাদেশের ও লিবিয়ায় অবস্থানরত দালালরা বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধমকি প্রদান করে।
এদিকে ইটালি পাঠানোর নামে ৮ লাখ টাকার কন্টাক্টে ১৪ লাখ নিয়েও দালালরা ইটালি পাঠায়নি বড়লেখার আরেক তরুণ ফাহাদ আহমদকে। ভুমধ্যসাগরে নৌকা ডুবিতে ফাহাদের মৃত্যুর ঘটনায় তার মা আয়েশা আক্তার স্থানীয় দালাল নাসির উদ্দিন ও তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের নাম উল্লেখ ও আরো ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে মানব পাচার ও মানি লন্ডারিং আইনে থানায় মামলা করেছেন। এ মামলায় পুলিশ নাসিরের স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে গ্রেফতার করে হাজতে পাঠিয়েছে।
বিয়ানীবাজারের নিখোঁজ যুবক আব্দুল হালীম সুজনের ভাই আব্দুল আলীম সুমন দালাল নাসির উদ্দিন, বদরুল হোসেন, লিবিয়ায় অবস্থানরত পারভেজ আহমদসহ আদম পাচারকারী চক্রের কয়েক সদস্যের বিরুদ্ধে পৃথক আরেকটি মামলা করেছেন।
বড়লেখা থানার ওসি মো. ইয়াছিনুল হক জানান, ভূমধ্যসাগরে ট্রলার ডুবিতে বড়লেখার এক যুবক নিহত ও অপর যুবক নিখোঁজের ঘটনায় থানায় পৃথক দুইটি মামলা হয়েছে। নিহত ফাহাদ আহমদের মা আয়েশা আক্তারের মামলায় স্থানীয় দালাল নাসির উদ্দিনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে পুলিশ গ্রেফতার করে হাজতে পাঠিয়েছে। নিখোঁজ জুয়েলের বাবা জামাল উদ্দিনের মামলার আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।