আইনজীবি আবিদা খুনের ১৪ দিনেও আদালতে পৌঁছেনি লাশের সুরতহাল রিপোর্ট
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:২২:৩৪,অপরাহ্ন ০৯ জুন ২০১৯
ঘটনার ১৪ দিন পরও লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন আদালতে না পৌঁছা, ১৬৪ ধারায় দেয়া আসামীর দেয়া জবানবন্দি ও জব্দ তালিকা আইনজীবিদের সরবরাহ না করা ইত্যাদি নানা কারণে নিহত আইনজীবি আবিদার সহকর্মীদের সন্দেহ ঘনীভুত হচ্ছে। তাদের দাবী এ মামলার প্রধান আসামী মসজিদের ইমাম তানভীর আলমের স্বীকারোক্তি রহস্যজনক।
হত্যাকান্ডে জড়িত পর্দার আড়ালের কুশিলবরা নিজেরা ধরাছোয়ার বাহিরে থাকতে এবং খুনিকে সুকৌশলে বাঁচাতে পরিকল্পিত এ স্বীকারোক্তি প্রদান করিয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবি সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট আবিদা সুলতানা (৩২) গত ২৬ মে বড়লেখায় পৈত্রিক বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। তিনি উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউপির (কাঠালতলী) মাধবগুল গ্রামের মৃত হাজী আব্দুল কাইয়ুমের বড় মেয়ে।এ ঘটনায় নিহতের স্বামী মো. শরিফুল ইসলাম বসুমিয়া ইমাম স্থানীয় মসজিদের ইমাম তানভীর আলম, তার স্ত্রী, মা ও ছোটভাইকে আসামী করে হত্যা মামলা করেন।ঘটনার পরদিন পুলিশ ৩ আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নেয়। তানভিরকে ১০ দিনের, স্ত্রী ও মাকে ৮ দিনের রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ ৫ম ও ৬ষ্ঠ দিনে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করে।ঘটনার পরদিন পুলিশ ৩ আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নেয়। তানভিরকে ১০ দিনের, স্ত্রী ও মাকে ৮ দিনের রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ ৫ম ও ৬ষ্ঠ দিনে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করে।
বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের আইনজীবি দীপক চন্দ্র দাশ, গোপাল দত্ত, হারুন-উর-রশীদ, জিল্লুর রহমান প্রমুখ জানান, নিহত সহকর্মী আবিদা সুলতানা হত্যাকান্ডের মামলা পরিচালনার জন্য আসামীর দেয়া স্বীকারোক্তি, জব্দনামা ও সুরতহাল প্রতিবেদন পর্যালোচনা অত্যন্ত জরুরী।
রোববার ঈদের ছুটি শেষে আদালত কার্যক্রম চালু হলে এসব কাগজের জন্য কোর্ট পুলিশের কাছে যাই। কিন্তু কোর্টের জি.আর.ও কামাল উদ্দিন আদালতের দোহাই দিয়ে তা সরবরাহ করছেন না। অথচ অন্যান্য মার্ডার মামলার যেকোন কাগজপত্র দেদারছে সরবরাহ করে থাকেন। জিআরও জানান সুরতহাল রিপোর্ট থানা থেকেই পাঠানো হয়নি। স্বীকারোক্তি ও জব্দনামা পড়ে যাওয়ার সুযোগ দেন।
আইনজীবিরা বিস্ময় প্রকাশ করে জানান, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন মামলার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘটনার ১৪ দিনেও এটি কোর্টে না পৌঁছার উদ্দেশ্য মুটেও সৎ হতে পারে না। প্রধান আসামীকে রিমান্ড শেষে আদালতে সোপর্দ করার পর তার দেয়া স্বীকারোক্তি অসামঞ্জ্যপূর্ণ। ভিকটিমকে লাঠি দিয়ে আঘাতের কথা বললেও জব্দ নামায় লাঠি নেই কেন।
ভিকটিমের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হলেও আসামীর মোবাইল ফোন কেন পুলিশ উদ্ধার করেনি। রিমান্ডের ৩ আসামীর একজনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ ও অন্য দুই আসামীর ১৬৪ নেয়া হল না কেন। ইত্যাদি নানা প্রশ্ন তুলে ধরে আইনজীবিরা সন্দেহের তীর বিভিন্ন দিকে ধাবিত করছেন।অ্যাডভোকেট দীপক চন্দ্র দাশ আরো বলেন, এমনও তথ্য রয়েছে থানায় রিমান্ডে থাকাকালিন প্রধান আসামী তানভীর আলমের সাথে প্রভাবশালী অনেকেই দেখা করে জবানবন্দি শিখিয়ে দিয়েছেন।
আদালত পুলিশের জি.আর.ও কামাল উদ্দিন জানান, আদালতের নির্দেশ না থাকায় তিনি জবানবন্দি ও জব্দনামা সরবরাহ করেননি। তবে উকিল সাহেবদের পড়তে দিয়েছেন। তাছাড়া লাশের সুরতহাল রিপোর্ট এখনও কোর্টে পৌঁছেনি।