কুলাউড়ায় বিধবা মহিলার জমি থেকে জোরপূর্বক গাছ কর্তনের অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৩৩:১০,অপরাহ্ন ১৭ আগস্ট ২০২৪
কুলাউড়া প্রতিনিধি :: কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের লংলা খাসে পূর্ব বিরোধের জেরে এক বিধবা মহিলার জমি থেকে গাছ কর্তনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মহিলা নাছিমা বেগম বাদী হয়ে গাছ কাটার সাথে জড়িত ৮-১০ জনকে অভিযুক্ত করে কুলাউড়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের লংলা খাস এলাকার বাসিন্দা নাছিমা বেগমের সাথে একই এলাকার বশির মিয়া গংয়ের জায়গা সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছে। টিলাগাঁও ইউনিয়নের লংলা টি.ই মৌজার খতিয়ান নং-১০০৬, জে. এল নং-৭৭, দাগ নং-১০২৩, ৭১ শতক ভূমি রেজিস্টারি দলিল মূলে মালিক হয়ে দীর্ঘদিন থেকে ভোগ দখল করে আসছেন নাছিমা বেগম। এই ভূমি নিয়ে বশির মিয়ার বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার আদালতে সিআর মামলা নং-৭৬/২০২১ (স্বত্ব) দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে। সম্প্রতি বশির মিয়ার নেতৃত্বে তাঁর ছেলে জামাল উদ্দিন, আসাব উদ্দিন, আরজান মিয়ার ছেলে রাজিদ মিয়া, ইয়াকুব মিয়া, রিয়াজ মিয়া, মৃত আকবর আলীর ছেলে ইছহাক আলী, মৃত আসব উল্ল্যাহ’র ছেলে গিয়াস মিয়া, উসমান মিয়ার ছেলে শামীম মিয়া, মৃত রাশিদ মিয়ার ছেলে ফারুক মিয়া, সোনা মিয়ার ছেলে নুরুল মিয়া, মৃত আলী হোসেনর ছেলে শাহ আলম, নুর ইসলামসহ একটি সংঘবদ্ধ দল জোরপূর্বক নাছিমা বেগমের ভূমি থেকে ১০-১২টি আকাশমনিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ও বাঁশ কাটেন। এসময় বাঁধা দিলে প্রতিপক্ষরা নাছিমা বেগমকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। নাছিমা বেগম বলেন, প্রতিপক্ষরা খুবই প্রভাশালী। তারা আমার দলিলকৃত জমি থেকে জোরপূর্বক অনেক গাছ ও বাঁশ কেটেছে। এতে আমার অনেক ক্ষতি হয়েছে। এরআগেও তারা আমার জমি থেকে অনেক গাছ কর্তন করে। এসব বিষয় নিয়ে কুলাউড়া থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তারা কিছুদিন গাছ কাটা বন্ধ রাখে। এখন আবার তারা বেপরোয়া হয়ে গাছ কাটা শুরু করেছে। বশির মিয়া গং তার সহযোগীদের নিয়ে প্রায়শই আমাকে হমকি প্রদান করায় এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আরজান মিয়ার ছেলে ইয়াকুব মিয়া বলেন, ওই জমিটি বশির মিয়া গংয়ের। তারা দীর্ঘদিন থেকে এখানে বসবাস করছে। তাদের ঘরের কাজের জন্য দখলে থাকা জমি থেকে কয়েকটি গাছ কেটে আমরা তাদের সহযোগিতা করেছি মাত্র। এ বিষয়ে ওই ভূমির মালিকানা দাবি করে বশির মিয়া বলেন, এই ভূমিটি নাছিমা বেগমের বাবা হুসন আলী আমার কাছে দখল বিক্রি করেছেন। প্রায় ৩০-৩৫ বছর ধরে এখানে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটি জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করছি। এখন আবার নাছিমা বেগম এই ভূমির মালিকানা দাবি করছেন। আমাদের জরাজীর্ণ বসতঘরের কাজের জন্য কয়েকটি গাছ কাটা হয়েছে সত্য। সরেজমিন গিয়ে গাছ কাটার সত্যতা মিলেছে। তবে ভূমির দখল নিয়ে উভয়পক্ষের বিরোধ চলছে দীর্ঘদিনের। বিষয়টি সমাধানের জন্য ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বাররা দায়িত্ব নিয়েছেন বলে জানা গেছে। টিলাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিঠুন কালোয়ার বলেন, গাছ কাটার বিষয়টি শুনেছি। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে জেনেছি, ওই জমি নিয়ে নাছিমা বেগম ও বশির মিয়ার বিরোধ দীর্ঘদিন থেকে চলছে। বশির মিয়া নাছিমা বেগমের পিতার কাছ থেকে ক্রয়মূলে মালিক আবার নাছিমা বেগম ওই জমির দলিলমূলে মালিক। চলমান বিষয়সহ জমির বিরোধটি স্থানীয় এলাকার গনমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বসে সালিশি বৈঠক করে সমাধানের চেষ্টা করবো।