সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন নিয়ে ধুম্রজাল
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:১০:৫৪,অপরাহ্ন ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
জুড়ী সংবাদদাতা :: অটো টেম্পু বেবি মিশুক সিএনজি সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন এর জুড়ী উপজেলার নির্বাচন নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।একাধিকবার নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন,স্থগিত,বহিষ্কারের খেলায় মেতে উটেছে জেলা কমিটি এবং শ্রম অধিদপ্তর।শ্রম মন্ত্রনালয় থেকে নিয়ে জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি,উপ কমিটি সব কমিটিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ জটিলতা তৈরী হয়েছে বলে অনেকের ধারনা।নেতৃবৃন্দের এসব কর্মকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সংকায় রয়েছেন সাধারন চালকরা।
জানা যায়,গত ৩১ জুলাই অটো টেম্পু বেবি মিশুক সিএনজি সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন মৌলভীবাজার জেলার সভাপতি পাবেল মিয়া ও সাধারন সম্পাদক আজিজুল হক সেলিম সাক্ষরিত প্যাডে ৪৫ দিনের জন্য জুড়ী উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি অনুমোদন করেন। বন,পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রীর খালাতো ভাই আহমদ কামাল অহিদকে আহবায়ক করে ও মক্তদির বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক,উপজেলা বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ইসহাক আলী কে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে।উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিংকু রন্জন দাসকে প্রধান উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জাকির আহমদ কালা, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বদরুল ইসলাম সহ ৬ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা সদস্য করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়।এসব কমিটিতে কোন শ্রমিক প্রতিনিধি রাখা হয়নি।
এর দুইদিন পর উপজেলা কমিটির বর্তমান সভাপতি,উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান চুনু এই কমিটির বিরুদ্ধে শ্রম মন্ত্রনালয়ে অভিযোগ করলে বিভাগীয় শ্রম দপ্তর মৌলভীবাজারের উপ পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম সাক্ষরিত জুড়ী উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি স্থগিত করে জেলা কমিটির কার্যক্রম ও স্থগিত ঘোষণা করেন। এ নিয়ে সৃষ্টি হয় ধ্রুমজাল।অনিশ্চয়তা দেখা দেয় নির্বাচন নিয়ে।গত ১৫ জুলাই তারিখ উল্লেখ করে উপজেলা কমিটির বর্তমান সভাপতি মতিউর রহমান চুনুকে অর্থ আত্বসাথের অভিযোগ এনে জুড়ী উপজেলার কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করে জেলা কমিটি।এ কপির অনুলিপি সোমবার (৬ আগষ্ট)জুড়ী নেতৃবৃন্দের হাতে আসে।
২৬ সেপ্টেম্বর বিলুপ্ত জেলা কমিটির সভাপতি পাবেল মিয়া ও সাধারন সম্পাদক আজিজুল হক সেলিম সাক্ষরিত প্যাডে পূর্বের কমিটির সবাইকে বাদ দিয়ে জুড়ী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মামুনুর রশীদ সাজু কে আহবায়ক করে ১২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন করেন।সেই কমিটিতে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কিশোর রায় চৌধুরী মনিকে যুগ্ম আহবায়ক সহ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাহাব উদ্দিন সাবেল ও সাধারন সম্পাদত ইকবাল ভূইয়া উজ্জ্বলকে সদস্য করা হয়েছে।কমিটি ঘোষণার ৮ ঘন্টা পর একই প্যাডে সেই কমিটি বাতিল করেন জেলা বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি,সাধারন সম্পাদক।কমিটির এই খেলায় নির্বাচন নিয়ে ধ্রূমজাল দেখা দিয়েছে সিএনজি শ্রমিকদের মধ্যে।নির্বাচন হবে কিনা কবে হবে এ নিয়ে সংশয় কাটছে না তাদের মধ্যে।কয়েকবার শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হয়েছে।দুই পক্ষের মধ্যে এসব বিষয়ে মামলা চলমান রয়েছে।
এসব উত্তেজনার মধ্যে সোমবার উপজেলার আওতাধীন ফুলতলা ইউনিয়নে নির্বাচন করেছে শ্রমিকরা।স্বতপূর্তভাবে এ নির্বাচনে সভাপতি হয়েছেন এলাইচ মিয়া এবং সাধারন সম্পাদক হয়েছেন সিজিল মিয়া।
জুড়ী বিজিবি ক্যাম্প চত্বর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, শ্রমিকদের জীবন নিয়ে যে খেলা শুরু হয়েছে এর শেষ কোথায়?।সাধারন শ্রমিকরা সুন্দর,শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের নেতা নির্বাচন করতে চায়,কিন্তু কিছু নেতারা এ নিয়ে টালবাহানা শুরু করেছেন।এসব টালবাহানা থেকে শ্রমিকরা মুক্তি চায়।
জুড়ী উপজেলা সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি(বর্তমানে বহিষ্কৃত) মতিউর রহমান চুনু বলেন,মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা কমিটির কোন এখতিয়ার নাই আমাকে বহিষ্কার করার।তারা শ্রমিকদের টাকা আত্বসাৎ করে মামলা ঘাটছেন,তারা কিভাবে জুড়ীর নির্বাচনের কমিটি দেন।
মৌলভীবাজার অটো টেম্পু বেবি মিশুক সিএনজি সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক আজিজুল হক সেলিম বলেন,বিভাগীয় শ্রম দপ্তর মৌলভীবাজারের উপ পরিচালক নাহিদুল ইসলাম এ জেলার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে শ্রমিকদের মধ্যে গ্রুপিং তৈরী করেছেন,তার কারনে শ্রমিকরা বিভিন্ন সময় সংঘর্ষে জড়িয়েছে,এ নিয়ে দুই জন খুন হয়েছেন।।আমি শ্রম দপ্তরে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি,সে আমার মামলার আসামী।কোন এখতিয়ারে সে আমাদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে।
মৌলভীবাজার অটো টেম্পু বেবি মিশুক সিএনজি সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি পাবেল মিয়া বলেন,শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালকের বিরুদ্ধে আমাদের মামলা চলমান, উনার এখতিয়ার নেই আমাদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার। জেলা কমিটি শ্রীমঙ্গল উপজেলা, কুলাউড়া উপজেলা নির্বাচন দিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন করেছে।
বিভাগীয় শ্রম দপ্তর,মৌলভীবাজারের উপ পরিচালক নাহিদুল ইসলাম বলেন,শ্রমিকের টাকা আত্বসাতের অভিযোগে জেলা কমিটির বিরুদ্ধে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরে মামলা বিচারাধীন রয়েছে।তাদের কমিটির কোন মেয়াদ,বৈধতা নেই বিধায় তারা কোন নির্বাচন দিতে পারে না।