চন্দ্রপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের খোজে জুড়ীতে প্রতিনিধি দল
প্রকাশিত হয়েছে : ৭:৫২:৩৮,অপরাহ্ন ২৬ জুলাই ২০২০
জুড়ী সংবাদদাতা :: মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে প্রাচীনতম কথিত চন্দ্রপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিত্বের পুরাকীর্তি সম্পর্কে জানার জন্য তিন দিনের অনুসন্ধানে মৌলভীবাজারে এসেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের একটি টিম।সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের স্বমন্বয়ে গঠিত প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল আজ ২য় দিন উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নে কথিত চন্দ্রপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিত্বের অনুসন্ধানের জন্য সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এলাকা পরিদর্শন, অনুসন্ধান ও মাঠ জরিপ করে পুরাকীর্তির আলামত সংগ্রহ করেন প্রতিনিধি দল তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মত কোন নির্দশন ছিল না বলে ধারনা করেন তারা।
আজ রবিবার (২৬ জুলাই) সকাল ১১ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক এবং প্রতিনিধি দলের প্রধান ড. মো. আতাউর রহমানের নেতৃত্বে ওই টিম এসব এলাকা পরিদর্শন করে আলামত হিসেবে পুথিঁ এবং পোড়া মাটির পাতিলের কিছু জিনিষ সংগ্রহ করেন।
জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান রুহুল ইসলাম সহ স্থানীয় গনমাধ্যমকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন টিমে রয়েছেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ফিল্ড কর্মকর্তা মো. শাহিন আলম, ময়নামতি জাদুঘরের সহকারী কাস্টোরিয়ান হাফিজুর রহমান, গবেষণা সহকারী মো ওমর ফারুক এবং প্রত্নতত্ত্ব সার্ভেয়ার চাইথোয়াই মার্মা। অনুসন্ধানে চন্দ্রপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিত্বের অবস্থানের বিষয়ে অনুসন্ধান ও প্রাথমিক মাঠ জরিপ পরিচালনা করে সঠিক কোন আলামত পাননি তারা তবে যেসব আলামত পেয়েছেন তা থেকে অনুমান করেছেন যে এখানে প্রাচীন কোন নির্দশন ছিল।
এর আগে গত ১৫ জুলাই ‘চন্দ্র বংশীয় রাজা শ্রীচন্দ্র কর্তৃক স্থাপিত কথিত শ্রীহট্টের চন্দ্রপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও পুরাকীর্তি সম্পর্কে সরেজমিন জরিপ ও পরিদর্শন প্রতিবেদন প্রয়োজন’ উল্লেখ করে সিলেট অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালককে চিঠি দিয়েছেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আমিরুজ্জামান।
চিঠিতে ‘কথিত বিশ্ববিদ্যালয় ও পুরাকীর্তি অ্যান্টিকস অ্যাক্ট ১৯৬৮ অনুসারে সংরক্ষিত ঘোষণা ও সংস্কার-সংরক্ষণের কোনো সুযোগ আছে কিনা এ সম্পর্কে সরেজমিন পরিদর্শন পূর্বক আলোকচিত্র ও মতামতসহ প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিনিধি দলের প্রধান প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো. আতাউর রহমান গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সরেজমিনে পরিদর্শনে এসে প্রাচীন স্থাপনার কাজে ব্যবহৃত অনেক পুরাকীর্তির আলামত সংগ্রহ করেছি।এগুলোর প্রতিবেদন দেওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে।পাশাপাশি যে পূথিঁ গুলো পাওয়া গেছে সেগুলো পরীক্ষা -নিরীক্ষা করলে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।
স্থানীয় শিক্ষিকা প্রভাসিনী মোহন্তের কাছ থেকে সংগ্রহ কৃত পুথিঁ পাওয়া যায়,যেগুলো ২০০০ সালে তিনি ঐ এলাকায় পুকুর খনন করতে গিয়ে পেয়েছিলেন বলে তিনি জানান।
সরেজমিন স্থানীয় লোকজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,এসব এলাকায় স্থায়ী কোন বসতি ছিল না।লোকজন বসতি স্থাপন করতে এসে বিভিন্ন প্রকার পুথিঁ, পোড়া মাটির পাতিল, ইট পেয়েছেন।পাশাপাশি একটি দিঘী রয়েছে,যেটি অনেক পুরনো।প্রচলিত রয়েছে যে, এই দীঘি কোন সময় পাহাড়ের মত ছিল পরবর্তীতে কোন এক প্রাকৃতিক দূযোর্গে এটি মাটির সাথে মিশে যায়। আবার অনেকের ধারনা, প্রাচীনকালে বৌদ্ধ রাজারা সেখানে বাস করতো।তাদের ব্যবহৃত জিনিষপত্র মাটির সাথে মিশে গিয়েছে।তাদের লেখাপড়ার স্থান ছিলো সেখানে।
জানা যায়, চন্দ্রপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল তবে সেটির অবস্থান হলো উত্তরে কুশিয়ারা নদী এবং দক্ষিন পশ্চিমে মনু নদী।এটি রাজনগরের পাচঁ গাও ইউনিয়নের পশ্চিম বাগ এলাকায় বলে বেশির ভাগের ধারনা।প্রত্নতত্ত্ব টিমের প্রতিনিধি, মাঠ কর্মকর্তা শাহীন আলম ও সেটি মনে করেন বলে জানান।তিনি আরও বলেন,জুড়ীতে যেসব আলমাত পাওয়া গেছে সেগুলো থেকে ধারনা করা যায় যে,এগুলো প্রাচীন কোন নির্দশনের।তবে পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া কোন কিছু বলা সম্ভব নয়।বিশ্ববিদ্যালয় থাকার মত কোন নির্দশন পাওয়া যায় নি।